নাছির চৌধুরীর প্রচারণায় বিব্রত বিএনপির তৃনমুল
সুনামগঞ্জ-২ উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলীর পক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী প্রকাশ্যে প্রচারণায় নামায় বিব্রতবোধ করছে তৃণমুল নেতাকর্মীরা। ভোট বর্জনের আহবান জানিয়ে বৃহস্পতিবার দিরাই প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের একাংশ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক পৌর বিএনপির আহবায়ক ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক হুমায়ন কবির তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন- এই তামাশা নির্বাচনে আমাদের অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার জন্য দিরাই উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুস শহীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটকে ঐক্যবদ্ধ রেখে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের আহব্বানকে সমুন্নত রেখে এই অবৈধ আওয়ামী সরকারের উপ-নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহব্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট বর্তমান ভোটবিহীন অবৈধ সরকারের অধীনে ৫ই জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন হতে অনুষ্ঠিত সকল সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩০শে মার্চ সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে উপনির্বাচনেও বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট অংশ নিচ্ছে না।
কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী টাকার ধনকুবের ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন রেজুর পক্ষে নিজ অনুসারীদেরকে নিয়ে প্রকাশ্যে জোর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিসের স্বার্থে উনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় লিপ্ত দিরাই-শাল্লার বিএনপি তথা সাধারণ জনগনের বোধগম্য নয়। এজন্য বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল নেতাকর্মী হিসাবে আমরা বিব্রত। উনি রাজনীতিকে ব্যবসাতে রুপান্তরিত করে টাকার কুমির ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন রেজুর জোর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যা দল ও জোটের জন্য অতন্ত্য বিব্রতকর ও বেদনাদায়ক । উনি রাজনীতিকে ব্যবসা মনে করেন এবং তাই করছেন। আর এ কারনে দিরাই-শাল্লাসহ জেলার প্রায় সব জায়গায় বিএনপি দ্বিধাবিভক্ত। জেলা বিএনপির আহব্বায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরীর এহেন অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ড আমলে নিতে দলের সবোর্চ্চ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো জানান, ২০০১ সালে নাসির চৌধুরী জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন। উনার অ-দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণে পরাজয় বরণ করেন। তার কিছুদিন পর উনি ২০০৩ সালে দলকে দোষারোপ করে উনার অনুসারীদেরকে নিয়ে স্থানীয় বিএডিসি মাঠে জনসভা করে প্রকাশ্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নগ্ন সমালোচনা করে দল ত্যাগ করেন। কিন্তু অন্য কোন দলে সুবিধা করতে না পেরে ২০০৫ সালে অনুসারিদেরকে নিয়ে আবার বিএনপিতে ফিরে আসেন এবং ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে আবারও পরাজিত হন এবং তিনি আবার ও দলের ভিতরে বিভাজন সৃষ্টি করতে থাকেন। যার কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের উনি দলীয় কর্মকান্ড ও দল থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সবরকম চেষ্টা চালান। উনার এহেন তৎপরতায় নিবেদিত প্রান বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা চরম হতাশ ও ক্ষুব্দ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পৌর যুবদলের আহবায়ক লিপন হাসান চৌধুরী, পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুস সামাদ মিয়া, পৌর ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মিলাদ, উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহবায়ক আবু হাসান চৌধুরী সাজু, নাঈম ইসলাম, শাহিনুর রহমান শাহিন ও রাজু চৌধুরী প্রমুখ।