নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদা মালার কথোপকথনের ‘গালিগালাজপূর্ণ একাধিক অডিও রেকর্ড ফাঁস’ হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের শীর্ষ একাধিক নেতা। এমনকি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোববার ভাইরাল হওয়া ওই অডিও রেকর্ড নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।
জানা গেছে, ফাঁস হওয়া অডিও মোট পাঁচটি। এর মধ্যে চারটি হচ্ছে খোকন সাহা ও মাহামুদা মালার বিভিন্ন সময়ের কথোপাকথন,  যেগুলো কেউ রেকর্ড করে ফাঁস করেছেন। এ কথোপকথনে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের গালিগালাজ করা হয়েছে। অন্য অডিওটি ছাত্রলীগের এক নেতাকে মোবাইল ফোনে মাহামুদা মালার গালাগালির। দলের দু’জন দায়িত্বশীল নেতার ফাঁস হওয়া অডিও সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, এতে তারা স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। তারা ভাবতেই পারছেন না খোকন সাহা ও মাহামুদা মালা তাদেরই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীকে অকথ্য, অশ্রাব্য ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে কথাবার্তা বলেছেন। এসব অডিও ফাঁস হওয়ায় তাদের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। তারা বলেছেন, আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল। আমরা তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুব মহিলা লীগের কমিটি গঠন নিয়ে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ সঠিক ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিভিন্ন থানা কমিটির নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করলে তারা বলেছেন, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের দ্রুত সিদ্ধান্তে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ও সম্মান রক্ষা করেছেন। যে পুরুষ ও মহিলার মধ্যে এমন কথাবার্তা হতে পারে, তাদের পক্ষেই সম্ভব সামাজিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ নারীদের যুব মহিলা লীগে স্থান দেয়ার অপচেষ্টা করা। বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন যাকে সভানেত্রী বানাতে সুপারিশ করেছেন ও যার পক্ষে এখনও অবস্থান নিয়েছেন সেই নারীর সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ক্রসফায়ারে নিহত মমিনুল্লাহ ডেভিডের সুসম্পর্ক ছিল। ওই নারী পরবর্তীতে জাতীয় পার্টিতে প্রবেশের চেষ্টা করলেও সেখানে তার স্থান হয়নি। আর সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদা মালা যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সেই নারীকে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ভুইগড়, জালকুড়ি ও শিবু মার্কেট এলাকা থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, রাজনৈতিক কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকা সত্ত্বেও এমন প্রশ্নবিদ্ধদের যুব মহিলা লীগের শীর্ষ পদে জায়গা দেয়ার চেষ্টার নেপথ্য কারণ তারা বুঝে গেছেন। এদিকে ফাঁস হওয়া অডিও প্রসঙ্গে বক্তব্য নেয়ার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদা মালার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তারা রিসিভ করেননি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn