বার্তা ডেস্ক :: কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের ভেতর নারী বন্দিদের জন্য পৃথক আরেকটি কারাগার নির্মাণ করেছে কারা অধিদপ্তর। নতুন এই কারাগারটির নাম ‘মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার, ঢাকা’। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কারাগারটি আগামীকাল রোববার (২৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে নারী বন্দিদের জন্য গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি নারী কেন্দ্রীয় কারাগার রয়েছে। এটি নারীদের জন্য প্রথম পৃথক কারাগার। এখন কেরানীগঞ্জের নারী কেন্দ্রীয় কারাগারটি হবে দ্বিতীয়। এখানে বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্ত নারী বন্দিদের রাখা হবে। ফলে ঢাকা বা দক্ষিণাঞ্চলের বন্দিদের কাশিমপুরে নিতে হবে না। নতুন এ কারাগারটি পরিচালনা করবেন কারা অধিদফতরের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পুরুষ বন্দিদের কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তখন নারী বন্দিদের কাশিমপুরের নারী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এখন কাশিমপুর কারাগারে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি বন্দি বাস করছেন। কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের (১৯৪ একর জমি) আওতায় নারীদের জন্য পৃথকভাবে ওই মহিলা কারাগার নির্মাণ করা হয়। গত মার্চে কারাগারটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও করোনার কারণে তা চালু করা হয়নি। রোববার কারাগারটি উদ্বোধন হলেও আপাতত সেখানে বন্দি রাখা হবে না। করোনার প্রকোপ কমলে ক্রমান্বয়ে সেখানে বন্দিদের আনা হবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব-উত্তর কোণে রয়েছে নবনির্মিত নারী কেন্দ্রীয় কারাগার। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ফটকের সামনে বিভিন্ন রঙের ফুল এবং বেলুন দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ফটক থেকে কারাগারের ভেতর বন্দিদের ভবনে যাওয়ার রাস্তায় আল্পনা আঁকছেন কারা কর্তৃপক্ষের লোকজন। কারাগারের উত্তর পাশে রয়েছে নান্দনিক নকশার চারতলার একটি ভবন। নাম বেগম রোকেয়া বন্দি ব্যারাক। এ ব্যারাকে ১৬টি ওয়ার্ডে ৩০০ জন বন্দি একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
দক্ষিণ পাশে রয়েছে পুকুর সংলগ্ন আরেকটি ভবন। নাম ইলা মিত্র সেন ভবন। এখানে ২৮টি কক্ষ রয়েছে। এর পাশেই রয়েছে সুলতানা রাজিয়া ডিভিশনাল ভবন। সেখানে ১০ জন ভিআইপি বন্দি থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পাশেই ডা. কাদম্বিনী মেডিকেল কারা হাসপাতাল। এ ছাড়া কারাগারের ভেতর বিশাল মাঠ পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে রয়েছে মানসিক রোগীদের জন্য মেন্টাল ওয়ার্ড, ওয়াশিং প্লান্ট, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গ্রন্থাগার। পশ্চিম ব্লকে রয়েছে প্রীতিলতা কিশোরী ভবন। এই ভবনে ১৮ বছরের কম বয়সের কিশোরী বন্দিদের প্রাথমিকভাবে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত মার্চে নারী কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণকাজ শেষে তা কারা অধিদফতরকে বুঝিয়ে দেন প্রকল্প পরিচালক জুহুরুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের প্রায় ৩০ একর জায়গায় নারী বন্দিদের জন্য ওই কারাগারটি নির্মাণ করা হয়। সেখানে নারীদের জন্য আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছে বিশাল মাঠ, লেক, ফুলের বাগান ও গ্রন্থাগার। এসব সুযোগ-সুবিধা বন্দিদের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে বলে আশা করি। নারী কেন্দ্রীয় কারাগারের সার্বিক কর্মকাণ্ড তদারকি করছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, এ কারাগারটি উদ্বোধনের পর কাশিমপুরসহ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে নারী বন্দিদের কেরানীগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। এতে নারী বন্দিদের আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে। -যুগান্তর
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৪৪ বার