নিজের ফাঁদেই ধরা পড়লেন ফরহাদ মজহার
অবশেষে উদ্ধার হয়েছেন কবি, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার। সোমবার ভোরে রাজধানীর শ্যামলী থেকেে একটি ফোন পেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর নানা নাটকীয়তার পর তাকে যশোরের নোয়াপাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ফরহাদ মাজহারকে অপহরণ করা হয়েছে এই কথা জানিয়ে আদাবর থানায় সাধারন ডায়েরীও করা হয়। এদিকে, ফরহাদ মজহার খুলনা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে ঢাকায় ফিরছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব। এ সময় নোয়াপাড়ায় র্যাবের টহল দল তাকে ওই বাসটি থেকে উদ্ধার করে। সোমবার রাতে ফরহাদ মজহারকে যশোরের নোয়াপাড়া থেকে উদ্ধারের পর এ কথা জানায় র্যাব। দিনভর নানা জল্পনা কল্পনার পর ফরহাদ মাজহারকে খোঁজে বের করতে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এরপরই তৎপর হয়ে উঠেন। ফরহাদ মাজহারের ফোনটি ট্র্যাপ করার মাধ্যমে গোয়েন্দারা তাকে সবসময় নজরদারিতে রাখতে শুরু করেন দুপুরের পর থেকে। সকালে বের হওয়ার পরই তিনি মোহাম্মদ বেড়িবাধ এলাকা দিয়ে কেরানীগঞ্জের দিকে যান। দুপুর ১২ টার পর ফরহাদ মাজহার মাওয়া ঘাট পাড় হয়ে যান বলে জানান গোয়েন্দারা।
র্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিকালের মধ্যেই ফরহাদ মাজহার খুলনা পৌঁছে যান। সেখানে তার সঙ্গে থাকা লোকজনও ফরহাদ মাজহারের স্ত্রী ফোন করে ৩৫ লাখ টাকার দাবি করেন। খুলনা শহরের নিঝুম আবাসিক এলাকার একটি বাসায় প্রায় ৩ ঘন্টার বেশি সময় অবস্থান করেন সবাই। সেখান থেকে নিউমার্কেট এলাকার হোটেলে রাতের খাবার খেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেন তিনি। এরপর যশোরের নোয়াপাড়া এলাকায় এলে র্যাবের টহল দল তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর থানায় নিয়ে যায়।
ঢাকার এক উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টা নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হলেই আমরা হস্তক্ষেপ করি। প্রথমে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করি যে, কি কারণে বা কারা তাকে অপহরণ করতে পারে? কিন্তু দুপুরের পর যখন পুলিশের সামনেই ফরহাদ মাজহারের ফোন থেকে টাকা চেয়ে অন্যকেউ কথা বলে তখনই সন্দেহ ঘনীভূত হয়। কোনো অপহরণকারীরা যাকে অপহরণ করে তার ফোন ব্যবহার করে না। বিষয়টা রহস্যজনক। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই বিস্তারিত জাননো যাবে। তবে তিনি নিজের ফাঁদেই ধরা পরছেন বলে আমরা মনে করি। প্রসঙ্গত, সোমবার ভোরে মোহাম্মদপুর আদাবরের ‘হক গার্ডেন’র নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে অপহরণ করা হয়। পরিবারের দাবি ভোর পাঁচটা ছয় মিনিটের দিকে নিজ ফ্ল্যাট থেকে বের হন ফরহাদ মজহার।