নির্বাচন পর্যবেক্ষকের নিবন্ধন পাচ্ছে ১২০ সংস্থা
নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ১২০টি সংস্থা প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে এসব সংস্থা বিরুদ্ধে কোন দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা আগামী ১৫ কার্যদিবসেরর মধ্যে ইসি সচিব বরারব লিখিত আবেদন জানাতে বলেছে কমিশন। ইসির যুগ্ম-সচিব এসএম আসাদুজ্জামান জানান, কারো বিরুদ্ধে কোন দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তার স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ অভিযোগকারী নাম, ঠিকানা ফোন নাম্বার উল্লেখপূর্বক ৬ সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে। শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। গণবিজ্ঞপ্তিটি কমিশনের ওয়েবসাইট www.ecs.gov.bd তে পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। ইসি সূত্রে তথ্য জানা যায়, যাচাই-বাচাই, আপত্তি শেষে যোগ্যতা সম্পন্ন সংস্থাগুলোকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দিবে কমিশন।এর আগে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। আগ্রহী সংস্থাগুলো আবেদন করার সময় ছিল গত বছরের ৭ নভেম্বর। নির্দিষ্ট সময়ে প্রায় ২ শতাধিক সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষক জন্য নিবন্ধনের আবেদন করে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা-২০১৭ অনুসারে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনে আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করে কমিশন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবার নামসর্বস্ব কোনো পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এজন্য নীতিমালায় কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। এ নীতিমালা অনুসারে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রের মধ্যে এসব বিষয়সহ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে তথ্যপ্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে। শুধু সেসব বেসরকারি সংস্থাই নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হওয়ায় অগ্রধিকার পাবে। এছাড়া নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন বা আছেন কিংবা নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আবেদন করা সময়ের মধ্যে কোন নির্বাচনের প্রার্থী হতে আগ্রহী ব্যক্তির সংস্থাও এবারে নিবন্ধন দেয়া হবে না বলে জানান তারা। ইসি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আরপিও-১৯৭২ সংশোধন করে প্রথমবারের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষক নীতিমালাও তৈরি করা হয়। এরপর ২০১০ সালে নীতিমালা সংশোধন করে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন ১৩৮টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করে। পরে ২০১৩ সালে নিবন্ধন নীতিমালা সংশোধন করে ১২০টি সংস্থাকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে কমিশন। যাদের পাঁচ বছর মেয়াদকাল ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হয়। পরে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশন নতুন করে নিবন্ধনের সুযোগ সৃষ্টি না করে ওই সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দেয়। ফলে সংস্থাগুলো মেয়াদকাল ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে শেষ হয়ে যায়। পরে নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন না চেয়ে বর্তমার কেএম নূরুল হুদা কমিশন গত ২৮ মার্চ নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে দেয়।