মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী-

সারা দেশের ন্যায় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইছে সুনামগঞ্জ-৫ নির্বাচনী এলাকায়। ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে মাঠের লড়াইয়ে সরব আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। দীর্ঘদিন ধরে ছাতক ও দোয়ারাবাজার দুই উপজেলায় বড় দুই দলে গ্রুপিং রাজনীতির কারণে তৃণমূল  পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পালন করে আসছেন বিভক্ত হয়েই।  এদিক থেকে জাতীয় পার্টি রয়েছে কৌশলী অবস্থানে। দীর্ঘদিন ধরে দু’উপজেলায় দলটির সাংগঠনিক তৎপরতা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেতে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ছাতক দোয়ারাবাজারে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে জাপার দখলে নিতে আগ্রহী পার্টির নেতা-কর্মীরা।

অন্যদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে লড়াইয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সাবেক ছাত্র নেতা ফরিদ আহমদ তারেক ও সাবেক ছাত্র নেতা শামীম আহমদ চৌধুরী। দলটির তিন হেভিওয়েট নেতাই এখন তৃণমূল পর্যায়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভক্ত হয়ে দুই উপজেলায় সাংগঠনিক তৎপরতাও চালাচ্ছেন তারা। দলীয় মনোনয়ন পেতে তিনজনই কোমর বেঁধে নেমেছেন মাঠে। এছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আরেক প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আইয়ুব করম আলী ভিন্ন স্লোগান ও ব্যানার ফেস্টুন দিচ্ছেন দুই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মুনসিফ আলী। বিএনপির ওই তিন নেতাই দীর্ঘদিন ধরে বিভক্ত হয়ে দুই উপজেলায় আলাদাভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে তিন হেভিওয়েট নেতাই দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠের লড়াইয়ে নামতে সরব প্রচারণা চালাচ্ছেন তিন নেতা। এ আসনে ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শফিক উদ্দিন জোটের মনোনয়ন পেতে চান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জোটগত মনোনয়ন পেতে ছাতক-দোয়ারাবাজার দুই উপজেলায় কাজ করছেন। খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা মনে করেন জোটের প্রধান শরিক বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকায় এ আসনটি খেলাফত মজলিসকে দেয়া হবে। তবে জোটের অন্য শরিক জামায়াতের উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মী বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে জোটগত ভাবে তাদের দল অংশ গ্রহণ করলে তারা ওই আসনটি চাইবেন।
অপর দিকে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেছেন। এ আসনে জাপা’র মনোনয়ন পেতে চান জেলা জাপা’র সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় সদস্য জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ ন ম অহিদ কনা মিয়া, জাপার কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর আলম। দোয়ারাবাজার উপজেলা জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক নুর হোসেন আব্দুল্লাহ বলেছেন, এ আসনে জেলা জাপার সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদকে মনোনয়ন দেয়া হলে আসনটি পুনরায় জাপার দখলে আসবে।  তবে মনোনয়নের দৌড়ঝাঁপে শীর্ষে রয়েছেন, জাপার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দোয়ারাবাজার উপজেলা জাপার সভাপতি আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে আসছেন। এ আসনটি জাপার দখলে নিতে কেন্দ্রিয় পর্যায়েও তিনি বিরামহীন কাজ করছেন বলে জানান জাপার তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা মহাজোটের প্রধান শরীক আওয়ামী লীগের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল কে কাজে লাগিয়ে কৌশলী অবস্থানে থেকে এ আসনটি জাপার দখলে নিতে চান।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn