এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকলের আন্তরিক চেষ্টায় পরীক্ষাগ্রহণ থেকে শুরু হয়ে ফল প্রকাশ সব ধাপই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। খাতা মূল্যায়নের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসায় পাসের হার কিছুটা কমেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ঠা মে) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী কাছে ১০ শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, যারা পাস করেছে তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। যা পাস করতে পারোনি তাদের মন খারাপ করার কিছু নেই। মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। আগামীবার পরীক্ষা দিয়ে আবারো পাস করবে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, আমার পরীক্ষা দিতে গেলে হাত-পা কাঁপত, গলা শুকিয়ে আসত। ক্লাস ফাইভে কয়েকজনকে বাছাই করিয়ে তাদের পড়াশোনা করিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ানো হতো। অষ্টম শ্রেণি এমনকি এসএসসিতেও এই ব্যবস্থা ছিল। আমরা সেটার পরিবর্তন করেছি। এখন সবাই পরীক্ষা দিতে পারছে, বৃত্তি পাচ্ছে। এবার ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি পাস করেছে এ প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েরা সবসময় পরীক্ষায় ভালো ফল করে। ছেলেদের আরও ভালো করতে হবে। আমাদের ছেলেরা অত্যন্ত মেধাবী। তারা ফেল করবে বিশ্বাস করা যায় না। একটু মনোযোগী হলে তারা ভালো ফল করতে পারবে।’ তিনি আরে বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পাস করে যখন তাদের হাতে সার্টিফিকেট আসে তখন তারা মানসিক শক্তি পায়। অষ্টম শ্রেণিতে পাস করার পর তাদের আত্মমর্যাদা বাড়ে। এসএসসিতে বোর্ড পরীক্ষায় তাদের মনের ভয় কেটে যায়। তারা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারছে। এ কারণে পাসের হারও বাড়ছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শিক্ষানীতিমালা গ্রহণ করেছি। নীতিমালা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। যার কারণে বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে এসএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২ মার্চ পর্যন্ত। এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষা ৪ মার্চ শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ মার্চ। এ বছর ১০টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের ৩ হাজার ২৩৬টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৩৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ১০ হাজার ৫০১ জন ও ছাত্রী ৮ লাখ ৭৬ হাজার ১১২ জন। নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৭ হাজার ১২৪ জন। এছাড়া অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৭৬ হাজার ১৯৮ জন এবং বিশেষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ জন।

গত বছরের চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০ জন বেশি হওয়ায় বাড়ানো হয় ৯৩টি কেন্দ্র। এর মধ্যে দেশের বাইরে বিদেশের (জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপোলি, দোহা, আবুধাবি, দুবাই, বাহরাইন ও ওমানের সাহাম) ৪৪৬ জন পরীক্ষার্থীর জন্য ছিল ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র। এ বছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষা নামে দুটি নতুন বিষয় যুক্ত হয়। বাংলা দ্বিতীয়পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রালপালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছে। এ ধরনের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn