পশ্চিমা ৭ রাষ্ট্রদূতকে কূটনৈতিক শিষ্টাচার মানার পরামর্শ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকায় সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূত আলাদা আলাদা টুইট করেছেন। তাঁদের এই পদক্ষেপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি রাষ্ট্রদূতদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন। শনিবার গণমাধ্যমে সাতটি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতদের টুইট নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ প্রতিক্রিয়া জানান। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘পৃথিবীতে কোনো দেশে রাষ্ট্রদূতদের জটলা করে এমনভাবে বিবৃতি দিতে দেখিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। আমি খুব খুশি হতাম এই রাষ্ট্র্রদূতেরা যদি জটলা করে বলতেন, রাখাইনে যুদ্ধ হচ্ছে, এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা (রাষ্ট্রদূতদের টুইটে দেওয়া অভিমত) কোনো কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তাঁদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তবে তা প্রটোকল অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে তাঁরা রাজনীতির মহড়ায় চলে গেছেন। তাঁরা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন। তাঁরা কি এ দেশে রাজনীতি করবেন? এ দেশে নির্বাচন করবেন? নাকি অন্য কোনো কিছু? আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এসব মতলব সুবিধার না। আমি আশা করব, তাঁরা তাঁদের প্রটোকল মানবেন এবং তাঁরা সেভাবেই কাজ করবেন। তাঁরা জ্ঞানীগুণী জন। তাঁদের এ ধরনের ব্যাপার প্রত্যাশিত নয়।’
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূত নিজেদের টুইটে করোনাভাইরাসের মতো মহামারির সংক্রমণের সময় নির্ভরযোগ্য ও বাস্তবভিত্তিক তথ্য প্রচার নিশ্চিত করার স্বার্থে গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দেন। তাঁদের মতে, সংকটকালে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে জনগণের জন্য অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করাটা জরুরি। ওই দিন মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসে টেরিঙ্ক, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা স্লাইটার, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিসেল ব্লিকেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি পেটারসন ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ আলাদা আলাদা টুইট করেন। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সরকার মানবাধিকারকর্মী, কার্টুনিস্ট, ব্যবসায়ীসহ চারজনকে আটক করে। বুধবার সরকার তাঁদেরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতেরা টুইটে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন করে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয় বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস জি ওয়েলস টুইটে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি) নতুন করে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’