পুলিশের মহানুভবতা: রক্ত দিয়েও বাঁচানো গেল না হামলায় আহত ব্যক্তিকে
গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের চারগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা আতাউর রহমান। তার মেয়ে ফাহিমা আক্তার (১৯) কে বছর খানিক পূর্বে বিয়ে দেন পার্শ্ববর্তী কাঠালকুড়িকান্দির রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোকলেছুর রহমানের সাথে। বিয়ের ৩/৪ মাস পর থেকে মোকলেছুর রহমান তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তারকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে (ঘর জামাই হিসাবে) বসবাস শুরু করেন। ৭/৮ মাস থেকে শ্বশুর বাড়ীতে বসবাস করায় মেনে নিতে পারেননি মোকলেছুর রহমানের আত্মীয় স্বজন।
যে কারণে গত ১৪ মে মোকলেছুর রহমানের আত্মীয় স্বজন তার শ্বশুর বাড়ীতে তাকে বুঝিয়ে নিজ বাড়ীতে নেওয়ার জন্য আসেন। এ সময় চারগ্রাম হাওরের নজবুল আলীর পুত্র নাছির উদ্দিন (৩২), জমসিদ আলীর পুত্র তাজ উদ্দিন, কাঠালকুড়ি কান্দি গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন, মইন উদ্দিন, আব্দুল কাইয়ুম ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। মোকলেছুর রহমান ও ফাহিমা আক্তারকে নিজ বাড়ীতে ফিরিয়ে নেওয়ার সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে উল্লেখিত ব্যক্তিরা ফাহিমা আক্তারের পিতা আতাউর রহমানের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে আতাউর রহমানের উপর চড়াও হয়ে হামলা চালান। এতে আতাউর রহমান গুরুতর রক্তাক্ত যখম হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আতাউর রহমানকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। আতাউর রহমান মেডিকেলে যাওয়া পর্যন্ত প্রচুর রক্তকরণ হওয়ায় ও নেগেটিভ জরুরী রক্তের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু অতি দরিদ্র আতাউর রহমানের স্বজনেরা রক্তের ব্যবস্থা না করতে পারায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে মেডিকেলে দেখতে গিয়ে ২ বেগ রক্ত দেন নিজ শরীর থেকে। শেষ পর্যন্ত নিজের রক্ত দিয়েও বাঁচাতে পারেননি ওই আতাউর রহমানকে। আতাউর রহমান বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, ঘটনাটির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এ বিষয়ে ফাহিমা আক্তার বাদী গোয়াইনঘাট থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এর আলোকে ১৫ মে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং- ২১, তারিখ- ১৫(৫)১৭ খ্রিঃ এবং তৎক্ষনাৎ উল্লেখিত ৪জন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আতাউর রহমান মেডিকেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মতিউর রহমান লাশের সুরত হাল প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠান এবং ময়না তদন্ত শেষে আত্মীয়স্বজনকে বুঝিয়ে দেন।