পৃথক বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন নিহত
ঢাকা : নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও রাজবাড়ীতে র্যাব-পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। নওগাঁর নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া হাট এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একদল ডাকাত। এমন খবর পেয়ে মান্দা ও নিয়ামতপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইমরান হোসেন (৪২) ও মোজাম্মেল হক (৪৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ আর দুই ডাকাতকে আটক করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ দুইটি উদ্ধার ও ডাকাতদলের ব্যবহৃত একটি মিনি ট্রাক জব্দ করে মান্দা থানায় নেওয়া হয়।
তিনি জানান, হতাহত দুইজনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোলে, অপর দুইজনের বাড়ি রাজশাহী ও নওগাঁর নিয়ামতপুরে। ইমরানের হোসেনের বিরুদ্ধে নওগাঁর নিয়ামতপুর, মান্দা, মহাদেবপুর, রাজশাহীর তানোরসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ কমপক্ষে ২০টি মামলা রয়েছে এবং মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতির অভিযোগে ৩টি করে মামলা রয়ে বলে জানান ওসি। এদিকে চুয়াডাঙ্গা ও রাজবাড়ীতে র্যাব-পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে দু’জন নিহত হয়েছেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে গোলাবারুদ সহ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করার দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা গ্রামে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ওল্টু মন্ডল নিহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে র্যাব একটি ওয়ান শ্যুটারগান, তিন রাউন্ড গুলি ও একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। নিহত ওল্টুর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা গ্রামের মৃত ঝড়ু মণ্ডলের ছেলে। র্যাব জানায়, নিয়মিত টহলের অংশ হিসাবে বুধবার রাতে র্যাব সদস্যরা আলমডাঙ্গার খাসকররা বাজারে যাচ্ছিল। পারলক্ষিপুর গ্রামের কুরির মাঠ অতিক্রম করার সময় পাশের মাঠ থেকে একদল সন্ত্রাসী র্যাবের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এসময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালালে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওল্টুকে উদ্ধার করে। পরে তাকে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম জানান, নিহত ওল্টুর নামে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ছয়টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কদম আলী অরুপে করম নামে এক চরমপন্থী সদস্য নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল পুলিশ থেকে একটি দেশিয় বন্দুক, একটি ওয়ান শ্যুটারগান ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। নিহত কদম আলী রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার তেনাপচা এলাকার কোব্বাত আলীর ছেলে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ জানান, গোপন সংবাদে বুধবার দিবাগত রাতে গোয়ালন্দ উপজেলার অন্তার মোড় এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা। এ সময় তারা স্থানীয় আমজাদের ভিটা এলাকা গেলে চরমপন্থী সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি করলে কদম আলী অরুপে করম আহত হয়। পরে আহত অবস্থায় তাকে গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কদম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা ডাকাতিসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ।