প্রচণ্ড ঢেউয়ে ঝুঁকিতে দেখার হাওরের প্রতিরক্ষা বাঁধ
দেখার হাওরের প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়েছে নবনির্মিত সদর উপজেলার ছেখনিখাড়া-গোয়াচড়া বাঁধ । ২ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁধের উপর নির্মিত সেমি মার্জিবল আরসিসি ছেখনিখাড়া-গোয়াচড়া সড়কের ঢালাই কাজ চলাকালীন সময়ে ঢেউয়ের আঘাতে ১০০ মিটার টু-ওয়াল ভেঙ্গে সড়কের অর্ধাংশ বিলিন হয়ে গেছে হাওরে। প্রতিকূল আবহাওয়া কারণে বন্ধ রয়েছে আরসিসি পাকা সড়কের কাজ। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে আবার সড়কের কাজ শুরু হলেও অনুপযোগি প্লানে কাজ বাস্তবায়ন হওয়ায় সড়কের ভবিষ্যৎ স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন ঠিকাদার, উপকারভোগী ও সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়- জাইকার অর্থায়নে ও এলজিইডির বাস্তবায়নে চলতি বছরের ১৯ মার্চ শুরু হয় ছেখনিখাড়া-গোয়াচড়া সড়কের আরসিসি রোড ঢালাইয়ের কাজ। এপ্রিলের শুরুর দিকে হাওরের আগাম বন্যা শুরু হলে দ্রুততার সাথে সড়কের ২ কিলোমিটার টু-ওয়াল ও ৩০০ মিটার আরসিসি রোড ঢালাইয়ের কাজ স¤পন্ন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দুযোর্গময় আবহাওয়ার কারণে বন্ধ থাকে সড়কের বাকি উন্নয়ন কাছ। হাওরের প্রচন্ড ঢেউ আছড়ে পরে সড়কের পাদদেশে। এক পর্যায়ে ঢেউয়ের আঘাতে নির্মিত টু-ওয়াল ভেঙ্গে বিলিন হয়ে গেছে ১০০ মিটারে সড়কের অর্ধাংশ। দিন দিন বাড়ছে ভাঙ্গাঅংশের পরিমাণ। এদিকে জাইকার ওয়ার্কপ্লান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ঠিকাদার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
এক বছর আগে ফেলা মাটি ভাল করে বসার আগেই সরু সড়কে সাবমার্জেবল আরসিসি রোড ঢালাইয়ে কাজ সড়কের জন্যে উপযোগি নয় বলে দাবি তাদের। এছাড়াও ১০ থেকে ১২ ফুট কাছ থেকে মাটি উত্তোলন করে সড়ক নির্মাণ করায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নবগঠিত এই সড়কটি। সঠিক পরিকল্পনায় আরসিসি ¯¬“পে ক্রসওয়ে রোড ঢালাই করলে সড়কটি টেকসই হবে বলে জানান সদর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ,প্রকল্প ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে চলমান প্রকল্পে হাওরে ঢেউ প্রতিরোধে ৭০০ মিটার ব্লক স্থাপনের কথা থাকলেও এটি পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি স্থানীয়দের। টেকসই সড়ক নির্মাণের জন্য নতুন ওয়ার্কপ্লান করার বিষয়ে জাইকার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন। জাইকা প্রতিনিধি দল অচিরেই ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনে বিহিত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ছেখনিখাড়া-গোয়াচড়া সড়কটি নির্মাণ হওয়ায় ভোগান্তি নিরসনে আশার সঞ্চার দেখা দিয়েছে সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ও মোলাপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে। পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগের জন্য মাইলফলক হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। তবে নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে ঢেউয়ের আঘাতে সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় যেন তাদের বাড়া ভাতে ছাঁই পড়লো। এলাকার ভোগান্তি নিরসনে টেকসই সড়ক স্থাপনের দাবি তাদের।
গোয়াচড়া গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ মিয়া বলেন, আমার ছয় মাস পানিবন্দী থাকি। এই রাস্তাটি আমাদের এতো দিনের দুঃখ দুর্দশার লাঘব করবে। কিন্তু ঢালাই কাজ চলমান অবস্থায় ঢেউয়ের আঘাতে রাস্তাটির অনেক স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে। শুনেছি প্রকল্পে মাত্র ৭০০-৮০০ মিটার স্থান ব্লক দেয়া হবে। ছেখনিখাড়া থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কে বর্ষায় ঢেউ প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে । তাই এই সামান্য পরিমাণ ব্লক যথেষ্ট নয়।
এই ব্যাপরে প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত ঠিকাদার মিলন কান্তি দে বলেন, চলতি বছরের ১৯ মার্চ প্রকল্পের টেন্ডার হয় । ৩১ মার্চ কাজ শুরু করে প্রায় দুই কিলোমিটার টু-ওয়াল ও ৩০০ মিটার আরসিসি রোড ঢালাই স¤পন্ন করি। কিন্তু বর্ষার প্রতিক‚ল অবস্থার কারণে সড়কের কাজ বন্ধ রাখা হয়। প্রবল ঢেউয়ে টু ওয়াল ভেঙ্গে কয়েক শ মিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, সড়কের ঢেউ প্রতিরোধে এই ওর্য়াক প্লান উপযোগি নয়। তাই আরসিসি ¯¬“পে ক্রস ওয়ে ঢালাই না করলে সড়ক টেকসই হবে না।