পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগয্য ঘোষণা করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পানামাগেট কেলেংকারি নিয়ে প্রকাশিত এক রায়ে আজ শুক্রবার এই রায় দেয় পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। খবর ডন নিউজ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইজাজ আফজাল খানসহ পাঁচজন বিচারক আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার পর পানামা পেপার্স দুর্নীতির মামলার এই রায় ঘোষণা করেন। বিচারকদের পক্ষে ইজাজ আফজাল খান রায় পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘একজন সৎ মানুষ না হওয়া প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পার্লামেন্টের সদস্য থাকার যোগ্য নন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও আর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন না। তার ক্ষমতাসীন দল  পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন)-কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন কারো নাম প্রস্তাব করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যৌথ তদন্ত দল(জেআইটি) কর্তৃক সংগৃহীত সব তথ্য-প্রমাণ সাত সপ্তাহের মধ্যে জবাবদিহিতামূলক আদালতে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সাফদার, মরিয়ম নওয়াজ, হাসান এবং হুসাইন নওয়াজের বিরুদ্ধে রায় ৩০ দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে।’

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকেও দায়িত্বে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। এই রায়ের ফলে তৃতীয় মেয়াদে পাকিস্তানের সরকারপ্রধানের দায়িত্বে থাকা এই রাজনীতিবিদকে এখন সরে দাঁড়াতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন বিচারকই রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। মামলার রায়কে ঘিরে ইসলামাবাদের আদালত প্রাঙ্গণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী নওয়াজ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠে। ওই অভিযোগের তদন্ত করে যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি)। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নওয়াজ ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎস জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত এই রায় দেন।

গত বছর পানামাভিত্তিক আইনি সেবাপ্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার ১ কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি প্রকাশ করে। তাতে বিশ্বের বহু ক্ষমতাধর, ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ সামনে আসে। এতেই নওয়াজ এবং তার চার ছেলেমেয়ের মধ্যে তিনজনের নাম আসে। গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, নওয়াজকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই। এ সময় আদালত প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের দাবির পক্ষে তথ্য সংগ্রহ করতে যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠনের আদেশ দেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn