প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক,জনস্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত : জাতীয় গণতান্ত্রকি ফ্রন্ট
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : দেশের ৫০তম প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক। বাজেটে জনস্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক রত্নাঙ্কুর দাস জহর ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম ছদরুল গণমাধ্যমে প্রেরিত একযুক্ত বিবৃতিতে বাজেট নিয়ে এমনটিই মন্তব্য করছেন। তারা সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের র্স্বাথরক্ষাকারী জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী বাজেট প্রত্যাখান করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও শ্রমজীবী জনগনের জীবন ও জীবিকা রক্ষার প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটে কোন দিক নির্দেশনা নাই। ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটের ২ লাখ ১৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকাই ঋণ করে র্অথাৎ ৩৫.৫৬ শতাংশই ঘাটতি বাজেট। আর এই ঋণ পরিশোধে দেশকে করা হবে ঋণগ্রস্থ। প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের সুদ বাবদ ৬৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা স্বাস্থ্য, কৃিষ, শিল্প, সামাজিক কল্যাণ ও নিরাপত্তা খাতের চেয়েও বেশি। ইতোমধ্যে মাথাপছিু ঋণ ৮৫ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছেই।
নেতৃবৃন্দ করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন,করোনা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ চিত্রই উন্মোচিত হয়নি সাথে সাথে সরকারের উন্নয়নের গালভরা বুলির উপরও চপেটাঘাত করেছে। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ৩২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও ‘সবার জন্য চিকিৎসা’ নিশ্চিত করার দিকনির্দেশ করা হয়নি। আর বরাদ্দকৃত অর্থের লুটপাট ও দূর্নীতি সাম্প্রতিক সময়ে অতীতের সকল রের্কড ভঙ্গ করেছে। এতদ্বসত্ত্বেও স্বাস্থের চেয়ে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেশি। শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের দাবি করা হলেও তাতে রয়েছে ‘শুভংকরের ফাঁিক। জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য’ তথা ‘এসডিজি’কে সামনে রেখে দেশি বিদেশি অবাধ বিনিয়োগের নামে প্রস্তাবিত বাজেট লগ্নপুঁজি ও দালালপুঁজির স্বার্থরক্ষা করায় শোষণ-লুন্ঠন আরো বেপরোয়া হবে। সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। কৃষি খাতের বরাদ্দে মূলত ধনী কৃষক এবং বহুজাতিক কোম্পানী লাভবান হবে। একই সাথে কৃষিতে সাম্রাজ্যবাদের সামন্তবাদী শোষণ তীব্র হয়ে কৃষক ও কৃষিব্যবস্থা বিপর্যস্ত হবে। সরকার ব্যক্তি আয়করের সীমা ৩ লাখ টাকায় অব্যাহত রাখলেও কর্পোরেট আয়কর ২.৫ শতাংশ হারে কমিয়ে ধনিকগোষ্টির তোষণ করছে। পাশাপাশি কালোটাকার মালিকদের জন্য রয়েছে বিনিয়োগের প্রশ্নাতীত সুযোগ। সরকার ধনিক গোষ্টীর সুযোগ দিতে প্রত্যক্ষ আয়কর বাড়ানোর পরবর্তে পরোক্ষ আয়কর বাড়িয়ে জনগনের পকেট কাটার ব্যবস্থা করেছে।
সরকারে আয় খাতের সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা আসবে। মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) থেকে, যা মোট আয়ের ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্য বৃিদ্ধর এই সময়ে জিনিসপত্রের মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি পাবে। প্রস্তাবিত বাজেট গণবিরোধী এবং গতানুগতিক ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন। তাই বাজেটকে যে ভাবেই উপস্থাপন করা হোক না কেন এই বাজেট মূলতঃ সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন সংস্থা তথা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের নীতি নির্দেশের আলোকে প্রণীত হয়। বাজেট যে সরকারের আমলেই পাশ হোক তাতে রাষ্ট্রের সুিবধাভোগী গোষ্ঠীর স্বার্থে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় না। যে কারণে বাজটের আকার বাড়লে লুটেরা গোষ্ঠীর সম্পদের আকার বাড়ে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সহায়-সম্পদ নষ্ট হয়। প্রচলিত ব্যবস্থায় বাজেট নিয়ে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আশাবাদী হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আজ তাই জাতীয় ও জনস্বার্থমুখী বাজেটের র্পূবশর্ত হচ্ছে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র,সরকার ও সমাজ। নেতৃবৃন্দ সেই লক্ষ্য প্রতিষ্ঠায় সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।