বার্তা ডেক্সঃঃসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে গত দুই সপ্তাহে চার লক্ষাধিক আবেদন জমা পড়েছে। গত ২৫ অক্টোবর থেকে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে আবেদন চলবে। আবেদন শেষে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ হলে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে। গত অক্টোবরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে সাড়ে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। শূন্য আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবেন না।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রার্থীদের বয়স ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং গত ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ৩২ বছর। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা।

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, এবারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারাদেশে ২৫ হাজার ৬৩০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ছয় হাজার ৯৪৭টি শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) সহকারী পরিচালক আতিক বিন সাত্তার বলেন, ‘গত ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) পর্যন্ত তিন লাখ ৮০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। আজ শনিবার এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আবেদন কার্যক্রম শেষে প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করা হবে। এরপর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হবে। এ প্রস্তুতি শেষে সময় ঘোষণা করে লিখিত পরীক্ষা শুরু করা হবে।’ ডিপিইর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, শনিবার বিকেল পর্যন্ত চার লক্ষাধিক অনলাইনে আবেদন জমা হয়েছে। আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখের বেশি আবেদন আসতে পারে। শেষের দুই সপ্তাহে বেশি আবেদন হতে পারে। আবেদন শেষে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

চাকরি আবেদনের বয়স: প্রার্থীর বয়স ২৫-০৩–২০২০ তারিখে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ বছর।

আবেদনের নিয়ম: আগ্রহী প্রার্থীরা (https://dpe.teletalk.com.bd/) ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করে আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মুজিববর্ষে সব শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি। তবে গত সেপ্টেম্বরে নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অক্টোবরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগের পর গত সেপ্টেম্বরে কোটামুক্ত রেখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রাথমিকের শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেড হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন, নিয়োগ দেওয়া হয় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। এর আগে একই বছর ২০১৪ সালের স্থগিত পরীক্ষাটিও নেওয়া হয়। ওই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ২৯ হাজার ৫৫৫ প্রার্থী। এর মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয় ৯ হাজার ৭৬৭ জনকে। এ দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত নির্বাচিত হননি ৫৬ হাজার ৯৩৬ প্রার্থী। উত্তীর্ণ এসব প্রার্থী ২০১০-২০১১ সালের মতো প্যানেল নিয়োগ চান। তবে মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, প্যানেলে নিয়োগ দেওয়া হবে না। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো।=পূর্বপশ্চিমবিডি

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn