প্রেমিকের হাত ধরে প্রবাসীর স্ত্রী উধাও
পরকীয়া সম্পর্কের টানে ২ সন্তানের বাবার হাত ধরে ৩ সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী পালিয়ে গেছেন। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নের নিজতালুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়য়ের বিরুদ্ধে মিরসরাই থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে খৈয়াছড়া ইউনিয়নের নিজতালুক গ্রামের মৃত হাফেজ মো. শফির ছেলে নুরুল বারি খোকনের সঙ্গে একই উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার জমাদার বাড়ির কামাল পাশার মেয়ে রাশেদা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিনজন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। রাশেদার স্বামী খোকন দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসে রয়েছেন। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজতালুক গ্রামের মৃত ফকির আহমদের ছেলে সাইফুল ইসলাম খোকনের ঘরে আসা-যাওয়া করতেন। এর মধ্যে খোকনের স্ত্রীর সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর খোকনের স্ত্রী রাশেদা সাইফুলের সঙ্গে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বাদী হয়ে স্বামী ও রাশেদার নামে মিরসরাই থানায় একটি মামলা করেন। একই দিন খোকনের বোনের স্বামী রেদোয়ানুল হক বাদী হয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে লুটের মামলা করেন।
এক মামলার বাদী রোকসানা আক্তার বলেন, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে রাশেদার সঙ্গে আমার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলে সে আমার ওপর নির্যাতন করতো। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ একাধিকবার সালিশ হয়েছে। সালিশে ওই মহিলার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু গত ৫ ডিসেম্বর আমার স্বামী খোকনের স্ত্রী রাশেদাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এখন আমি দু’টি সন্তান ও বৃদ্ধ শাশুড়ি নিয়ে কিভাবে থাকব, কিভাবে বাঁচব বুঝতে পারছি না। অপর মামলার বাদী খোকনের বোনের স্বামী রেদোয়ানুল হক বলেন, আমার শ্যালক দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসে বসবাস করছে। সাইফুল মাঝে মধ্যে আমার শ্বশুরবাড়িতে যেত। এক সময় সাইফুল ও রাশেদার মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে একাধিকার বৈঠক হয়। কিন্তু তারা সংশোধন হতে পারেনি। গত ৫ ডিসেম্বর রাশেদা সাইফুলের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এ সময় তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বিদেশ থেকে বিভিন্ন সময় ঘর নির্মাণ করতে পাঠানো ১৫ লাখ টাকা, ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তার তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানদের কথাও চিন্তা করেনি রাশেদা। তাই আমরা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) শামসুল ইসলাম বলেন, সাইফুল ও খোকনের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কয়েকবার বৈঠক করেছিলাম। উভয়ে আর সম্পর্ক রাখবে না বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে খোকন বিদেশ থেকে ফোন করে জানান, তার স্ত্রী তাকে রেখে পালিয়ে গেছে। তার জীবনে সঞ্চিত সব অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি। জানতে চাইলে মিরসরাই থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রমিজ আহম্মদ বলেন, পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।