ফিনল্যান্ডে সিটি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন বাংলাদেশি শামসুল আলম
মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন,ফ্রান্স, থেকে
ফিনল্যান্ডের শহর কেরাভা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশি শামসুল আলম। গত রোববার (৯ এপ্রিল) এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ পর্ব। এবারই প্রথম কেরাভা সিটির নির্বাচনে কোনো বাংলাদেশি প্রার্থী বিজয়ী হলেন। শামসুল আলম একক বাংলাদেশি অভিবাসী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। বাঙালিবিহীন এই এলাকায় তার বিজয়ের পেছনে কি কাজ করেছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, মূলত প্রচণ্ড সাহস আর মনোবলের সঙ্গে ছিল স্থানীয় বিদেশি লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক ও নিজ দলের লোকজনের ভালোবাসা। শামসুল আলম জানান, সাত বছর আগে তিনি ফিনল্যান্ডে আসেন। এর তিন বছর পর ২০১০ সালে যখন ভাষা শিক্ষার কোর্স করছিলেন তখন তার পরিচয় হয় স্থানীয় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাইলা হলতার (Maila Höltä) সঙ্গে। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ফিনল্যান্ডের অন্যতম রাজনৈতিক দল ভাসেমিস্ততে যোগ দেন এবং তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিয়মিত যোগ দিতে থাকেন তিনি। এবার তারা তাকে দলের তরফ হতে কাউন্সিলর পদের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করে। বিজয়ের পর শামসুল আলম বলেন, এটি আমার ব্যক্তিগত বিজয় নয় এটি প্রবাসী সমগ্র বাংলাদেশিদের বিজয়। তাকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
আইনের ডিগ্রিধারী প্রচারবিমুখ শামসুল আলম রাজনীতির বাইরে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়নে কাজ করে আসছেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামে তার পৈতৃক বাড়ি। তার বাবা মুজাহেদ উদ্দিন আহমেদ স্কুলশিক্ষক ছিলেন। মা হোসনে আরা। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন।
ফিনল্যান্ডের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশির বিজয় অনন্য মাইলফলক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। যা ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্যের পথ প্রশস্ত করবে। এদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বেশির ভাগ দলগুলো আগের অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও আগের বারের তুলনায় ভোট প্রাপ্তির হার কমেছে। এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন তিন দলের মধ্যে কোকোমোস ২০,৬ শতাংশ (-১.৩) ভোট পেয়ে শীর্ষে রয়েছে। আরেক অংশীদার কেশকুস্তা ১৭,৮ শতাংশ (-০,৯) ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে। অংশীদার আরেক দল রক্ষণশীল পেরুস সুওমা ৮.৮ শতাংশ (-৩.৬) ভোট পেয়ে পঞ্চম হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এসডিপি ১৯,৪ শতাংশ (-০.২) ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে। গ্রিন পার্টি ১২.৩ শতাংশ (+৩.৮) ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছে। তা ছাড়া বাম দল ভাসেমিস্ত ৮.৮ (+০৮) ভোট পেয়ে ষষ্ঠ হয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে রক্ষণশীল দলগুলো বিশেষ করে পেরুস সুওমা ধর্মীয় দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির ব্যাপক ভরাডুবি এবং গ্রিন পার্টির উত্থান ছিল চোখে পড়ার মতো।