ফেলা000
তন্দ্রা রয়-
উত্তাল সমুদ্র। প্রবল ঝড়ে প্রমোত্ত জীবন। ডুবতে ডুবতে ভেসে থাকার জন্য খড় কুটির সন্ধান- আকঁড়ে ধরে জীবন বাঁচানোর তাগিদ। একদিন হঠাৎ দেখা মেলে এক স্বপ্নের রাজকুমারের। কাব্য কথার যাদুকরী মুগ্ধতায় কোন কিছু না ভেবেই, উঠে পড়া তার জাহাজ। বাতিঘরের সন্ধানে। ঘাটে ঘাটে নোঙ্গর ফেলা সেই রাজকুমার আমাকে শোনায় বন্দরের সৌন্দর্য কথা। সেই সব বন্দরের কোথায় কোন কারুকার্যে সে মুগ্ধ তার সুনিপুন বর্ননা। বোকা আমি, ডুবে যাবার ভয়ে। হারিয়ে ফেলার ভয়ে। চোখে জল নিয়ে । বুকে পাথর চেপে শুনতাম তার রাজ্যসহ রাজকন্যা জয়ের কাহিনী। কিযে কষ্ট হতো আমার, সে একের পর একজনকে ভালবাসছে আমাকে আবার তার গল্প শোনাচ্ছে। ঠিক এমনই এক অনুভুতি আমার জন্যও ছিলো তার কোন একদিন। আমাকে প্রায়ই বলতো তারচেয়ে আরও সুন্দর কোন জাহাজ পেলে নাকি আমি তার জাহাজ ছেড়ে চলে যাবো। আমি হাসতাম। কারণ আমি জানি, “অভিমু্ন্যর চক্রবাহুর প্রবেশের মতো আমি ভালোবাসায় ঢোকাটাই শিখেছি বেরোনোটা না”। তারপর একদিন হঠাৎ এক সকালে দেখি আমার জাহাজ শুন্য। কোথাও কেউ নেই। না রাজকুমার না তার সঙ্গীরা। দৌড়ে জাহাজের বারান্দায় এসে দাড়িয়ে দেখি এক সুসজ্জিত জাহাজে করে রাজকুমার চলে যাচ্ছে দুর। দেখলাম। কিছুই বলতে পারিনি শুধু মনে মনে ভাবি এতো সহজে ভুলে যায় মানুষ। আমি আজও পড়ে আছি মাস্তুলবিহীন শুন্য জাহাজে। বেলাশেষের আলোয় একা একা ভাঙ্গা জাহাজে বসে। দূর থেকে দেখতে পাই তার নানা বন্দরে নোঙ্গর ফেলার চিন্হ। “.সুনিপুন যাদুতে একদিন যে ভালোবাসা সে জমা রেখেছিলো সবুজ টিপে। তারব চেয়ে অধিক কৌশলে অধিক সুনিপুন ভাবে সেই ভালোবাসা আজ তুলে নিয়ে সে জমা রাখলো অন্য কোন মসৃণ কপালে। ” আচ্ছা আরও সুন্দর আরও গতিময় জাহাজ পেলে সেকি আবার টিপ বদল করবে ? আঠা থাকবে তো এমনই নাকি খসে পরবে হঠাৎ ? কে জানে মানুষকে দেয়া কষ্টের হিসাব এই পৃথিবীতেই নাকি দিতে হয়। মৃত্যর পরে নয়। অভিশাপ নয় এও ভালোবাসা।