বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্বীকৃতি আনন্দের: ফখরুল
একাত্তরের ৭ মার্চ যে ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে ‘আনন্দের’ বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিভিন্ন দেশের আরও ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রগমানের সেই ভাষণকেও গত মাসের শেষে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করে নেয় ইউনেস্কো। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদযাপনে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশ আয়োজনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৎপরতার মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এই প্রতিক্রিয়া আসে বিএনপি মহাসচিবের। বাম ছাত্র সংগঠন দিয়ে রাজনীতিতে পা রেখে এখন বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালনরত ফখরুল বলেন, “আজকে খুব বড় সমাবেশ হচ্ছে। এই সমাবেশকে বলা হচ্ছে এটা কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, এটা হচ্ছে একটা রাষ্ট্রীয় নাগরিক সমাবেশ। এটা হচ্ছে, যে বক্তব্য ৭ মার্চ দেওয়া হয়েছিল, সেটা ইউনেস্কো তালিকাভুক্তি করেছে, সেজন্য এই সমাবেশ। “তো ভালো কথা। আমরা তো মনে করি যে, এটা আনন্দের কথা।”
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষণে বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিশা দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু; তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তার ওই ভাষণ বাঙালিকে কীভাবে উজ্জীবিত করেছিল, তা তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান তার এক লেখায়ও লিখে গেছেন; যদিও তার গড়া দল বিএনপির সমালোচনা রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকার না করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্বীকৃতি উদযাপনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশেও অমত না থাকার কথা জানান বিএনপি মহাসচিব। তবে এতে জনসমাগমে নানা পদক্ষেপের সমালোচনাও করেন তিনি। ফখরুল বলেন, “প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজকে চিঠি দিয়েছেন, না আসলে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না। ব্যাংকে চিঠি দিয়েছেন, না আসলে পাঁচ দিনের বেতন কাটা যাবে। “টিচার-শিক্ষক সবাইকে এই কথা বলে নিয়ে আসছেন। সকালে দেখে এসেছি, বড় বড় বাসে স্কুলের বাচ্চাদের তোলা হচ্ছে। আমাদের তো আপত্তি নেই।” “একদিকে আপনারা সমস্ত মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢেকে দিচ্ছেন। অন্যদিকে এসমস্ত কথা বলে মানুষকে প্রতারিত করছেন,” বলেন ফখরুল।
বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় বসে নাগরিকদের সব স্বাধীনতা হরণ করে নিয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফখরুল। ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক মন্ত্রী জাকারিয়া খান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নাজমুল হক নান্নু, মেহেদি আহমেদ রুমী, প্রয়াত ন্যাপ নেতা মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে ন্যান্সি রহমার, স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুল হুদা বক্তব্য রাখেন।