বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্রে কী আছে!
গত ২৮ মার্চ দুই তরুণী বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে তেজগাঁও লিংক রোডের পিকাসো রেস্তোঁরায় তাদের আলাপ-পরিচয় হয়। এরপর থেকে প্রায়ই বাদিনীর সঙ্গে টেলিফোনে আসামি শাফাত আহমেদের কথা হতো। এই আলাপ-আলোচনার মাঝে শাফাত তার জন্মদিনে বাদিনীকে বান্ধবীসহ আসতে বলেন। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী আবাসিকএলাকানিকেতন থেকে দুই তরুণীকে গাড়িতে করে রেইনট্রি হোটেলে আনেন। এরপর চালক বিল্লাল হোসেন দুই তরুণীকে হোটেলের রুম পর্যন্ত পৌঁছে দেন।
ওই দিন হোটেলে পার্টির কোনো পরিবেশ না দেখে তরুণীরা চলে যেতে চাইলে শাফাত ও তার বন্ধুরা বাধা দেন। তারা কেক কাটার পর যেতে বলেন। বাদিনীর বন্ধু শাহরিয়ার ও এক বান্ধবী এ সময় চলে যেতে চাইলে শাফাত ও নাঈম মারধর করেন শাহরিয়ারকে। তারা শাহরিয়ারের গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ও তার বান্ধবীকে এক রুমে আটকে রাখেন। শাফাত তাদের ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘পালাবি না।’ এরপর শাফাত আহমেদ বাদিনীকে এবং নাঈম আশরাফ বাদিনীর বান্ধবীকে ধর্ষণ করেন।
এ ছাড়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, তদন্তে রেইনট্রি হোটেলের অতিথির তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামি শাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটনার আগের দিন ২৭ মার্চ পার্টির জন্য মদ এনে হোটেলকক্ষে রাখেন। শাফাত ও নাঈম আদালতে জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেছেন, তারা বাদিনী ও তার বান্ধবীকে ধর্ষণ করেছেন। শাহরিয়ারকে মারধরের ঘটনা ভিডিও করেন গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। শাফাতের নির্দেশে বিল্লাল জন্মনিরোধক ওষুধ নিয়ে আসেন। শাফাত জোর করে সেই ট্যাবলেট দুই তরুণীকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাদিনী না খেতে চাইলে শাহরিয়ারকে দিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। শাহরিয়ার তাতে রাজি না হলে তাকে শাফাত ও নাঈম মারধর করেন। এ ঘটনা বিল্লাল ভিডিও করেন। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে মুছে ফেলা তিনটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। এর একটি ভিডিওতে একাধিক পুরুষের কথোপকথন শোনা যায়। তাতে একজন পুরুষকে হাতজোড় করে বসে থাকতে দেখা যায়। পুলিশের উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, অভিযোগপত্রে বাদীপক্ষে মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৯ জুন এ মামলার নথি আদালতে উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের পার্টিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৬ মে শনিবার রাতে জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাতসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।