বনানীর ঘটনা ধর্ষণ? না প্রতারণা?
বননানীতে আবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জন্মদিনের কথা বলে বনানীর বাসায় গার্ল ফেন্ডকে ডেকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত বাহাউদ্দিন ইভানকে (২৮) ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় বইছে। এটি ধর্ষণ না প্রতারণা এ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেছেন। কেউ বলেছেন, ‘রাতে হোক বা দিনে হোক, কোন বন্ধুর পার্টিতে যদি যেতে হলে নিজের পরিবার কে অবগত করে পরিবারের কাউকে সাথে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তা হলে পরিবারের কোন মানুষের সামনে অবশ্যই ছেলেটি ধর্ষণ করতো না। মেয়েটি নিশ্চয় একা গিয়েছিল সেই ছেলের বাসায়।আপনি সেচ্ছায় জেনে বুঝে যাবেন তার পর আপনার বোকামি যখন টের পাবেন তখন বলবেন ধর্ষণ। তাতো হতে পারেনা।ধর্ষিতা মেয়েটি আগের ঘটনাটি থেকে কেন শিক্ষা নিলো না? কেন রাতের জন্মদিনের পার্টিতে সে একা গেলো? বর্তমানে ধর্ষণ এর সংজ্ঞা ও পরিবর্তন করা উচিৎ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত রির্পোটে জানা যায়-
‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীর সঙ্গে একাধিকবার ‘শারীরিক সম্পর্ক’ গড়ে তোলে বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক ইভান। বিবাহিত হয়েও বিয়ে করবেন বলে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবারই সুকৌশলে নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে মেলামেশা করতেন। এভাবে তাদের মধ্যে সাত থেকে আটবার ‘শারীরিক সম্পর্ক’ হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে বাসায় নিয়ে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ইভান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একাধিক চিকিৎসক জানান, শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ওই তরুণী কীভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তা বর্ণনা করেন। তরুণী এর আগে বিয়ে এবং মৃত সন্তান প্রসব করেন বলেও জানান। বাদীর দেয়া তথ্য মতে, সেই রাতে বাসায় গিয়ে তিনি কোনো ধরনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আলামত দেখতে পাননি। ভয়ে বাড়ি ফিরতে চাইলে ইভান তাকে বাড়ি ফিরতে দেয়নি। তারপর তারা রাতের খাবার খান এবং ইভান তাকে জোর করে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। সেটি খেতে অস্বীকৃতি জানালে ইভান তাকে বলেন, একদিন খেলে কিছু হবে না। এরপর রাত দেড়টার দিকে ইভান ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন। তরুণী বলেন ‘ধর্ষণের সময় আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকলে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগটি রেখে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ইভান। পরে এক পথচারীর সাহায্যে নিজ বাসায় ফিরে আসি। ’
এই ধর্ষণ ঘটনার বিবরণ থেকে স্পষ্ট বোঝ গেল, ইভানের সাথে মেয়েটির সর্ম্পক ছিল। তাদের মধ্যে ইতোপূর্বে ৭ থেকে ৮বার শারীরিক সম্পর্ক হয়। ইভান যে বিবাহিত সেটাও মেয়েটি জানতো। আর এ অবস্থায় মেয়েটি ইভানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়ে ছিল। এবং যতবার ইভানের সাথে মেয়েটির শারীরিক সম্পর্ক হয় ততবারই উভয়ের সম্মতিতে হয়েছিল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তা হলে এটাকে ধর্ষণ বলা যাবে? ধর্ষণ হলো ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ইভান প্রতারণা করেছে ধর্ষণ করেনি। জন্মদিনের কথা না বলে পূর্বের মতো যদি তরুণীর সঙ্গে যদি ‘শারীরিক সম্পর্ক’ করতো তাহলে তরুণী মেয়েটিও বিচার প্রার্থী হতো না। মেয়েটি যখন দেখেছে ইভান তাকে বিয়ে করবেনা সে প্রতারণার মাধ্যমে তাকে ভোগ করতে চায় তখনই তার টনক নড়ে।
আসলে সমস্যা অন্য জায়গায়। এই সব ঘটনার মুলে রয়েছে মুল্যবোধের চরম অবক্ষয়।আমাদের হাজার বছরের পারিবারিক ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে চলা। বাঙালি সংস্কৃতিকে পরিহার করে বিজাতীয় সংস্কৃতির চর্চা করা। স্টারপ্লাস, স্টারজলসার আগ্রাসন।
দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুচক বাড়ছে। সবকিছু ডিজিটাল হচ্ছে।এর চেয়ে ভাল খবর বাঙালি জাতির জন্য আর কি হতে পারে। তবে উন্নতির মানে এই নয় বেহাপনা এবং বাঙালি জাতির হাজার বছরের পারিবারিক মুল্যবোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যে যার মতো চলা।
আমি মনে করি যে আকাশ সংস্কৃতি বাঙালি সংস্কৃতি, আমাদের চেতনা, আমাদের সামাজিক মুল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তা এখনই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমাদের শেষ ভরসার স্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে শেষ করছি।