বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে লড়বেন ব্যারিস্টার সুমন
বার্তা ডেস্ক :: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ক্লাবে জুয়ার আসর থেকে ১৮০ কোটি টাকা আয় করেন’ মন্তব্য করার জেরে সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদ সাইফুল আমিনের পক্ষে লড়বেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল আমিনের পক্ষে বিনা পয়সায় আইনি লড়াই করার ঘোষণার বিষয়টি তিনি নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিনকে বরখাস্ত না করে হুইপের বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযোগ এনেছেন কর্তৃপক্ষ তার ব্যাখ্যা চাইতে পারত। কিন্তু তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বরখাস্ত করা বেআইনি। এতে সৎ পুলিশ অফিসাররা উৎসাহ হারাবেন। এ কারণে আমি তার পক্ষে উচ্চ আদালতে বিনা পয়সায় আইনি লড়াই করব।’ গত মঙ্গলবার হুইপের বিরুদ্ধে ১৮০ কোটি টাকা আয়ের অভিযোগ আনা পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) এর পক্ষে এআইজি (পিআইও-১) আনোয়ার হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়। পুলিশ সদর দফতরের ওই চিঠিতে বলা হয়, বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপ, জনসম্মুখে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা তথা অসদাচরণের দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) মোতাবেক ঢাকার উত্তরা ১৩ এপিবিএনে কর্মরত সাইফুল আমিনকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন।
চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে গত পাঁচ বছরে ক্লাবটির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল আমিন। গত ২০ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন তিনি। সাইফুল আমিন একসময় চট্টগ্রামের হালিশহর থানা, চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের হাজতখানাসহ বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিলেন। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এর আগেও আমি মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। নুসরাতের পরিবার এ মামলার বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। তবুও মোয়াজ্জেমের কর্মকাণ্ড আইনসম্মত না হওয়ায় আমি ওই মামলাটি করেছিলাম। ঠিক তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রিয়া সাহার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের মামলার আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার প্রিয়া সাহার বক্তব্য শুনতে চায় বলে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। এবার আমি বরখাস্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে উচ্চ আদালতে লড়ব। এদিকে ফেসবুকে ওই পোস্ট দেয়ার ঘটনায় সাইফুল আমিনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেনের আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেনের আদালতে মামলাটি করেন হুইপ শামসুল হক চৌধুরী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমকে তদন্ত করে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সৌজন্যে : জাগোনিউজ২৪