বাংলাদেশে যেভাবে এলা রিক্সা
বার্তা ডেক্সঃঃ রিক্সা- গ্রাম থেকে নগর, শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবার কাছে সব জায়গায় অতি পরিচিত একটি বাহনের নাম । মোটা কিংবা সরু, কাঁচা বা পাকা সব রাস্তাতেই দেখা মেলে তিনচাকার এই যানটিকে । কম দুরত্বের জায়গায় যেখানে বড় কোন গাড়িতে উঠার সুযোগ হয় না, সেই জায়গায় রিক্সাই হয় যাতায়াতের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম । তাই তো যুগ যুগ ধরে গ্রাম থেকে শহরের অলিগলিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মানবচালিত এই যানটি । স্বল্পমূল্যে স্বস্তির ভ্রমন করা যায় বলে অনেকের কাছেই রিক্সা চলে এসেছে পছন্দের যানবাহনের তালিকায় । বর্তমানে দেশে ২ লক্ষেরও বেশি রিক্সা চলাচলা করছে । স্বল্পমূল্যের এই যানটি এদেশে একদিনে আসেনি । জনপ্রিয় যানটি বাংলাদেশে আসার পেছনে রয়েছে মজার একটি ইতিহাস । রিক্সা মূলত জাপানি ভাষার একটি শব্দ, যার বাংলা অর্থ- মনুষ্যচালিত যন্ত্র । অনেক আগ থেকে প্রচেষ্ঠা চালালেও ১৮৬৯ সালে জাপানি নাগরিক ইজুমি ইউসুকি তার দুজন সহকর্মীর সাহায্যে এটি আবিস্কার করেন । তবে ওই সময়ের রিক্সাগুলো এখনকার মতো তিনচাকার ছিল না । সেগুলো দুই চাকার উপর ভর করে চলত । যা একজন মানুষ ঠেলাগাড়ির মতো টেনে নিয়ে যেতেন ।
জাপানের এই ব্যতিক্রমী যানটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে । বিশেষ করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা পায় ত্রিচক্রের এই যানটি । পরবর্তীতে জাপানের এই রিক্সাটিকে দুইচাকা থেকে তিন চাকায় রুপ দেওয়া হয় । যদিও আধুনিকতার ছোয়ায় দু’চাকার রিক্সা এখন আর তেমন দেখা যায় না । তারপরও বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় দুই কিংবা তিন চাকা দুই রকমেরই রিক্সার দেখা মেলে । দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনেক আগে আসলেও বাংলাদেশে এর চলাচল শুরু হয় ১৯৩০ সালে । অনেক পরে শুরু হলেও বাংলাদেশে অতি অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে উঠে রিক্সা । সেই সাথে নিত্যনতুন নকশাও সংযোজন হতে থাকে তিন চাকার এই যানটিতে । সাইকেলের আদলে তৈরি করা এসব রিক্সায় চালকসহ তিনটি সিট রাখা হয় । যেখানে অনাহাসেই দুজন যাত্রী বসতে পারেন । প্রথমে হাত দিয়ে টেনে চলা রিক্সা, পরবর্তীতে পায়ের দ্বারা চালানো গেলেও বর্তমানে এটাতে ইলেকট্রিক সংযোগ দেওয়া হয়েছে। রিক্সায় সংযুক্ত বিশেষ মোটর সিস্টেম তিনচাকার এই যানটিকে টেনে নিয়ে যায়। ভবিষ্যতে এটিকে সৈারবিদুৎ চালিত করার প্রচেষ্ঠা চলছে ।