প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটা খুব দুর্ভাগ্য মানবজাতির জন্য যে, প্রতি সময় আমরা দেখি যেকোনো একটা মহামারী আকারে দেখা দিলে সেখানে কিছু শ্রেণি আছে তারা তাদের আর্থিক লাভ লোকসানটার দিকে যতবেশি তাকায় ঠিক মানুষের দিকে অত তাকায় বলে আমার মনে হয় না। এটা শুধু আমার দেশে বলে না, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এটা আমরা লক্ষ্য করি। যে কারণে টিকাকে আমি সার্বজনীন করার জন্য বলেছি। শুধু তাই না আমি এটাও বলেছি বাংলাদেশ টিকা তৈরি করতে প্রস্তুত।’ সোমবার বিকাল ৪টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের করোনার টিকাকে সর্বজনীন করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন থেকে এসে এই সংবাদ সম্মেলন করছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে ১০ একর জায়গা নিয়ে রেখেছি। সার্বিক ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যে গাভির (টিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট) সঙ্গে আলোচনা করেছে, ডব্লিউএইচও’র (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমরা বলেছি আমরা ফর্মূলা চাই। আমরা সিড চাই এবং আমরা বাংলাদেশে এটা (টিকা তৈরি) প্রস্তুত করতে পারবো।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এইটুকু বলবো যে বাংলাদেশ, হ্যাঁ আমরা চেষ্টা করেছি। আমি বাংলাদেশের মানেুষের কাছে কৃতজ্ঞ এই কারণে যে, যখনই আমরা আহ্বান করেছি যে, করোনা মোকাবিলা করার জন্য যা যা করণীয় তারা যেন সেটা পালন করে। অনেক সময়, প্রথমদিকে দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু এখন সবাই অন্তত সেটা মেনে চলে। মেনে চললে পরে, এমনকি টিকা নেওয়ার পরও কিন্তু মাস্কটা পরে রাখা বা একটু দূরত্ব রাখা বা হাতট পরিষ্কার রাখা। এটা কিন্তু করা উচিত। এটা করতে হবে। এটা করলে পরে আরো অনেকটা এগুতে পারবো।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশেষ করে কৃষিজাত পণ্য রফতানির দিকে নজর দিচ্ছি। তার জন্য প্রথমেই দরকার ফসল ক্ষেত থেকে তোলার পর তা সংরক্ষণ এবং কার্গোতে তুলে দেওয়া। তার জন্য কার্গো ভিলেজ করতে হবে। যেখানে বিভিন্ন চেম্বার থাকবে। কোন ফসল-কোন তরকারিটা হবে, কোনটা কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভালো থাকে—এগুলোর কিন্তু আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফল আছে। আর আমি নিজে নেদারল্যান্ডসে দেখেছি, আমাদের দেশেও এটা করবো। ক্ষেত থেকে কার্গোতে নিয়ে আসার জন্য সেই ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। এখন আমরা কার্গো ভাড়া করে বিদেশে পাঠাই, কিন্তু আমাদের নিজস্ব কয়েকটা কার্গো দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টমেটোর জন্য আলাদা চেম্বার, অন্যান্য সবজির জন্য আলাদা চেম্বার করতে হবে। আমাদের যে অঞ্চলে যে ফসল ভালো হবে, ওই ফসলের প্রক্রিয়াজাত করে যদি আমরা রফতানি করতে পারি, তাহলে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো। আমি মনে করি, কৃষিপণ্য রফতানি করে আমরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে আইসিটি ডিভাইস রফতানি। সেই সঙ্গে কৃষিপণ্য, খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত করা। এভাবে একটার পর একটা করলে বাংলাদেশে আর কোনও আর্থিক সমস্যা থাকবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্থায়ী বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। তার নিচে একটি বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। জাতিসংঘ সদর দফতরে কোনও রাজনৈতিক নেতার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ এটিই প্রথম। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিরল সম্মান। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমরা আলোচনা করি, বৃক্ষরোপণ আমাদেরও লক্ষ্য। বাংলাদেশে আমরা সেটি করে যাচ্ছি। জাতিসংঘ সদর দফতর প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করতে পারা সত্যেই আমার জন্য আনন্দের।’
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১০১ বার