বিদেশি চ্যানেল দেখে স্ত্রী হত্যার কৌশল রপ্ত!
সিয়াম ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মনোয়ারা পারভিনকে। কিন্তু বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই স্ত্রী জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। আর স্বামী সিয়াম এটা মেনে নিতে পারেননি, তাই সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রীকে পৃথিবী হতে সরিয়ে দেবেন। আর এ কাজে তিনি সাহস পান বিদেশি চ্যানেলে প্রচারিত ক্রাইম পেট্রোল দেখে।সিয়াম মনে সাহস সঞ্চার করে কয়েকবার হত্যার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু সফল হননি। অবশেষ ে ৫ এপ্রিল রাতে হত্যার প্রস্তুতি নেন, কিন্তু তার স্ত্রী ঘুমিয়ে যাওয়ায় হত্যা করতে পারেননি। এরপর ৬ এপ্রিল সকাল সাতটায় স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন ঘুম থেকে জেগে উঠলে ভালোবাসার পরশে ভুলিয়ে দৈহিক মিলন করেন স্ত্রীর সঙ্গে, পরে সকাল ৯টার দিকে ঠান্ডা মাথায় শুরু হয় তার আসল কাজ।প্রথমে তাকে পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। কিন্তু তা বিফলে গিয়ে লাগে ডান হাতে। কিছুক্ষণ উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হওয়ার পর গলায় চালিয়ে দেন ছুরি। আর সঙ্গে সঙ্গেই ঢলে পড়েন মনোয়ারা পারভীন। উভয়ের মধ্যে প্রায় দশ মিনিট ধরে চলা এই হত্যালীলার শব্দ ও মনোয়ার বাঁচার আকুতিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। সবাই মনে করেছেন প্রতিদিনের মতোই তাদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে।এভাবেই পুলিশের হাতে আটক সিয়াম স্ত্রী হত্যার সাবলীল বিবরণ উপস্থাপন করেন।সিয়াম জানান, স্ত্রীকে হত্যার বাথরুমে গিয়ে রক্তমাখা পোশাক পাল্টিয়ে শ্বশুরের পোশাক পরে বাড়ি থেকে গোপনে বের হয়ে যান। পরে সেখান থেকে প্রথমে ময়মনসিংহ, বান্দরবন, বগুড়ার পর দিনাজপুরে গেলে পুলিশের জালে আটকে যান।
স্ত্রী মনোয়ারা পারভীনকে (২৪) খুন করার অভিযোগে স্বামী মোশারফ হোসেন সিয়ামকে ঘটনার সাত দিন পর শুক্রবার রাতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের দূরসম্পর্কের মামা আনিছুর রহমানের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে বগ ুড়া ও পরে দিনাজপুরের মাগুরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিয়াম পুলিশের কাছে স্ত্রী মনোয়ারাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ ঘাতক মোশারফ হোসেনকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। ৬ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৯টায় শ্রীপুর পৌরসভার প্রশিকা মোড় এলাকার বাবা মনির হোসেনের বাড়িতে মনোয়ারা পারভীনকে গলাকেটে হত্যা করেন তার স্বামী। এ ঘটনার পর মোশারফ হোসেন সিয়াম ওরফে শুভ ঘরের পেছনের জানালা ভেঙে পালিয়ে যান।