বিদেশ গিয়ে ৩০ শতাংশ নারী কর্মী দেশে ফেরেন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে
প্রায় এক দশক ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশ ফেরত কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করেন বেসরকারি সংস্থা ওকাপ এর কর্মী লুৎফা বেগম ও তার সহযোগীরা। তাদের মতে, বিদেশে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ায় লজ্জা আর অপমানে পরিবার ও সমাজ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন অনেক কর্মী।ওকাপের একজন মাঠকর্মী বলেন, এসব বিদেশ ফেরত নারীদের অনেক সময় তাদের স্বামীরা মেনে নেন। কারণ তাদের স্বামীরা তো জানেন অভাবের তাড়নায় তাদের স্ত্রীদের বিদেশ পাঠিয়েছিলেন তারা। ওকাপের আরো একজন মাঠকর্মী বলেন, আমার দেখা মতে অনেকেই গর্ভবতী হয়ে দেশে ফিরেছেন। সমাজেও তাদেরকে হীন দৃষ্টিতে দেখা হয়। আমরা এমআর এর মাধ্যমে তাদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছি। ওকাপ এর তথ্যমতে, যৌন নির্যাতনের শিকার নারী কর্মীদের ৩০ শতাংশই অন্ত:সত্ত্বা হয়ে দেশে ফেরেন। চিকিৎসকের পরামর্শে এদের মধ্যে ৮০ শতাংশ গর্ভপাতের সুযোগ পেলেও বাকীরা অনাকাঙ্ক্ষিত সন্তান প্রসবে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে, প্রবাসী নারী শ্রমিকের সুরক্ষার পাশাপাশি, বিদেশে নিয়োগকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দক্ষ আইনজীবী নিয়োগের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
বামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ড. তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, প্রবাসে নারীরা ঘরের ভিতরে কাজ করেন বিধায় সেখানে নিগ্রহের বিষয়টি তদারকি কষ্টসাধ্য। দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি রয়েছে তার মধ্যেমেই সেখানকার আইনের মাধ্যমেই কিন্তু এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। বায়রার যুগ্ম মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আমাদের উচিত কঠিন পদক্ষেপগুলো নেয়া। এগুলো যদি করতে পারি তাহলে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর ঘটবে না। এদিকে, প্রবাসে নির্যাতনের শিকার নারী কর্মীদের আইনি সহায়তার ক্ষেত্রে অনেক বাধার কথা জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব। এমন পাশবিক নির্যাতন থেকে নারী কর্মীদের বাঁচাতে অভিযুক্ত দেশে কর্মী পাঠানো নিষিদ্ধ হতে পারে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব।