সর্বশেষ একজন সরকারি উচ্চপদস্থ চাকরিজীবীর সঙ্গে প্রতারণা করে ৭ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির কাছে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সিআইডি ভুয়া পাত্র দেখার ফাঁদ পেতে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। সিআইডি সূত্র জানায়, তামান্নার গ্রামের বাড়ি জামালপুর। যদিও প্রথমে সে তার বাড়ি সম্পর্কে ভুল ঠিকানা হিসেবে কিশোরগঞ্জ জানায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তার স্বামী রাজধানীর একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্বামী এবং ছেলেকে নিয়ে রামপুরা ব্লক-ই ভাড়া বাসায় থাকেন।
অর্থের লোভে স্বামীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তামান্না প্রায় এক বছর আগে চক্রের মূল হোতা সাদিয়া জান্নাতের সঙ্গে অপকর্মে যোগ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তামান্না খুব ধূর্ত প্রকৃতির। এক বছর আগে পার্কে হাঁটতে গিয়ে সাদিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তারা নিজেদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে এক সময় সাদিয়ার চক্রে যোগ দেয় তামান্না। সূত্র জানায়, পাত্রের চাহিদা অনুযায়ী তামান্না নিজেকে সেভাবে উপস্থাপন করতেন। প্রায় ৬ মাস আগে একজন সরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। এরপর তারা প্রায়ই রেস্টুরেন্টে দেখা করতেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলতো তাদের ফোনালাপ। পরবর্তীতে ইউরোপে নেয়ার কথা বলে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক দফায় প্রায় ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তামান্না। চক্রের মূল হোতা সাদিয়া সর্বপ্রথম ওই পাত্রের কাছে নিজেকে পাত্রী হিসেবে উপস্থাপন করেন। সাদিয়ার চলন-বলন অতিরিক্ত আধুনিক হওয়ায় প্রতারণার শিকার ব্যক্তি তাকে অপছন্দ করেন। পরবর্তীতে সে কি ধরনের পাত্রী চায় জানতে পেরে তামান্নাকে সেই কাঙ্ক্ষিত পাত্রী সাজিয়ে উপস্থাপন করা হয়।
সূত্র জানায়, গত ১৭ই সেপ্টেম্বর চক্রের মূল হোতা সাদিয়া জান্নাত ও তার স্বামী এনামুল হাসানকে গ্রেপ্তারের খবরটি গণমাধ্যমে দেখতে পেয়ে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি। এখন পর্যন্ত এক ডজন ব্যক্তি তামান্নার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। তারা মূলত পত্রিকার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিয়ে করে বিদেশ নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি সিআইডির একটি টিম এক ব্যক্তিকে মিথ্যা পাত্র সাজিয়ে তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় সে একইভাবে পাত্রের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে পাত্রের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। সিআইডির ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের এসএস (স্পেশাল সুপারনেটওয়ার্ক পুলিশ) শামসুন্নাহার মানবজমিনকে বলেন, গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে তার রিমান্ডের আবেদন করলে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তার সঙ্গে আরো কেউ যুক্ত আছে কি-না সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।