ভয়াবহ সতর্কতা দিয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। বলেছে, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী আরেকটি মন্দা এগিয়ে আসছে। ২০২৩ সমালের মধ্যে এক বছরব্যাপী মন্দায় পড়বে বৃটেন। গ্যাস ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে ওই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়াবে শতকরা কমপক্ষে ১৩ ভাগ। বৃহস্পতিবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এই পূর্বাভাষ দিয়েছে। অন্যদিকে রেজ্যুলুশন ফাউন্ডেশন বলেছে, অনিশ্চিত এক অবস্থার মধ্যে আগামী বছরে মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়াতে পারে শতকরা ১৫ ভাগ। এরই মধ্যে ব্যাংক তার সুদের হার শতকরা ০.৫ ভাগ বাড়িয়ে ১.৭৫ ভাগ করেছে। ১৯৯৭ সালের পর এক ধাক্কায় এটাই সবচেয়ে বড় সুদহার বৃদ্ধি। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ। ব্যাংক অব ইংল্যাল্ড তার পূর্বাভাসে বলেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফজেম যদি জ্বালানি খরচ প্রায় ৩৪৫০ পাউন্ডে উন্নীত করে, তাহলে অক্টোবরে কনজুমার প্রাইসেস ইনডেক্স মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ১৩.৩ ভাগে দাঁড়াবে।]
কমপক্ষে ৪২ বছরের মধ্যে তা হবে সর্বোচ্চ। এমন হলে তখন বেশ কয়েক বছর আর ভর্তুকি দেয়া না-ও হতে পারে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বৃহস্পতিবার বলেছে, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি অর্থনীতিকে ক্রমশ মন্দার দিকে নিয়ে যাবে। ২০২৩ সালের প্রতিটি চতুর্ভাগে জাতীয় প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) কমে যাবে। এর পরিমাণ হতে পারে শতকরা ২.১ ভাগ। ঐতিহাসিক মানদ-ে এর ফলে প্রবৃদ্ধি হবে খুবই দুর্বল। এতে আরও পূর্বাভাস করা হয়েছে যে, এ কারণে ২০২৫ সালের পর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হবে শূন্য অথবা খুবই সামান্য। এই করুণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে একটানা দুই বছর পরিবার প্রতি বাস্তবিক আয় কমে যাবে। ১৯৬০ এর দশকে এ বিষয়ে রেকর্ড রাখা শুরু হয়। তার পর এই প্রথম এমন অবস্থা হবে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই আয় এই বছর কমে যাবে শতকরা ১.৫ ভাগ। আগামী বছর ২.২৫ ভাগ। বিশেষজ্ঞরা যখন সতর্কতা দিয়েছেন, মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়াতে পারে শতকরা ১৫ ভাগ। এর প্রেক্ষিতে মনিটারি পলিসি কমিটি (এমপিসি)-এর কর্মকর্তারা সুদের বেজ রেট শতকরা ১.২৫ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ১.৭৫ ভাগ করেছেন। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ২৭ বছর আগে ট্রেজারি থেকে স্বাধীন হয়। তারপর এই প্রথমবার তাদের সবচেয়ে বড় অংকের সুদের হার বৃদ্ধি। ১৯৯৫ সালের পর এবারই প্রথম সুদের হার শতকরা ০.৫ ভাগ বৃদ্ধি করেছে তারা। এই বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দিয়েছেন এমপিসির ৯ সদস্যের মধ্যে আটজন। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন একজন।
এর ফলে যেসব বাড়ির মালিক মর্টগেজ নিয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের মর্টগেজের হার বৃদ্ধি পাবে শতকরা প্রায় ২০ ভাগ। এর ফলে মাসে মর্টগেজের সঙ্গে যুক্ত হবে অতিরিক্ত প্রায় ৯০ পাউন্ড। ফলে গড়ে মর্টগেটের পরিমাণ হবে এক লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড। বাড়ির মালিকদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগেরই এক্ষেত্রে রয়েছে ফিক্সড চুক্তি। ফলে অল্প সময়ের জন্য তারা নিরাপদ থাকতে পারেন। কিন্তু এক তৃতীয়াংশ মানুষ দুই বছরের মধ্যে এই চুক্তি হারাবেন। ফলে তাদেরকে অনেক বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে। ওদিকে পাউন্ডের মূল্য পতন হয়েছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার বৃদ্ধি করার পর ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের পতন হয়েছে শতকরা ০.০৫ ভাগ। তবে সুদের হার বৃদ্ধির আগে এই হার ছিল ০.৭ ভাগ। ইউরোর বিরুদ্ধে পাউন্ডের দাম পতন হয়েছে শতকরা ০.৫ ভাগ। এক ইউরো সমান সেখানে ১.১৮৯ পাউন্ড।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১০৮ বার