সাঈদ চৌধুরী- বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা করেছেন, করোনা ভাইরাস টিকা দেয়া জোরদার করতে তিনি সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছেন। গতকাল প্রেস ব্রিফিংয়ে বরিস দাবি করেছেন, এনএইচএস আগামী শুক্রবার থেকে উচ্চাভিলাষী লকডাউন শেষের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্রতিদিন ২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন (জ্যাব) দিতে সক্ষম হবে। প্রতিটি কেয়ার হোমের বাসিন্দাকে জানুয়ারির শেষের দিকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম ‘সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা’ । তবে যুক্তরাজ্যে দুর্বলদের টিকা দেয়ার পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। ভ্যাকসিন রোল আউটকে টানেলের অপরপ্রান্তে আলো হিসেবে অখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, শীর্ষ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত সমস্ত গোষ্ঠীগুলিকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে টিকা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ডোজ পাওয়া যাবে। তিনি জানুয়ারির শেষে প্রতিটি কেয়ার হোম রেসিডেন্টকে টিকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং একটি নতুন জাতীয় অনলাইন বুকিং ব্যবস্থা ঘোষণা করে আশা করছেন প্রক্রিয়াটি দ্রুততর হবে।
এনএইচএস ইংল্যান্ডের প্রধান স্যার সাইমন স্টিভেন্স যুক্তরাজ্যের প্রয়াসকে ‘শক্তিশালী শুরু’ বলে প্রশংসা করেছেন। তবে তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী উভয়ই স্বীকার করেছেন, প্রতি সপ্তাহে কয়েক মিলিয়ন লোককে টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে ‘অসুবিধা’ এবং ‘রাস্তায় ধাক্কা’ খেতে হবে।ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ১৩ মিলিয়ন লোককে টিকা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৩ মিলিয়ন পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে।এখন পর্যন্ত মাত্র ১.৫ মিলিয়ন কমপক্ষে প্রথম ডোজ পেয়েছে। এর অর্থ ৩৯ দিনের মধ্যে ১১.৫ মিলিয়ন দিতে হলে দিনে প্রায় ৩ লাখ ডোজ প্রদান করতে হবে। যারা ভ্যাকসিন দেয়ার আগে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, মিঃ জনসন তাদের জন্য দুটি নিয়মিত ওষুধ- টোকিলিজুমব এবং সরিলুমব ড্রাগের কথা ঘোষণা দিয়েছেন। আজ বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিত্সার জন্য এটি ব্যবহার করতে পারবেন। এতে তারা মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম হবেন।
এদিকে বৃটেন করোনা মহামারীতে দ্বিতীয় সবচেয়ে খারাপ দিন অতিক্রম করেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ১,১৬২ জন গতকাল প্রাণ হারিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে দৈনিক কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে আশার সামান্য ঝলক হচ্ছে, সংক্রমণ গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য হ্রাস পেয়েছে। গত রাতে ডাউনিং স্ট্রিটের প্রেস কনফারেন্সে ব্রিগেডিয়ার ফিল প্রোসের টিকাদান কর্মসূচিকে ত্বরান্বিত করার জন্য জোর দিয়েছেন। তিনি সামরিক বাহিনীর রোলআউট র্যাম্প করার জন্য ‘যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশল’ ব্যবহার করবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, আমার টিম জটিলতা এবং সবচেয়ে কঠোর ও চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সরবরাহ চেইনগুলির গতি তৈরিতে সক্ষম হবে। লন্ডনের এক্সেল সেন্টার এবং স্পোর্টস স্টেডিয়াম প্রায় সাতটি গণ টিকা কেন্দ্র খোলা হবে। ইতিহাসের বৃহত্তম টিকাদান অভিযান হিসেবে বিবেচিত এনএইচএস অপারেশনের জন্য প্রায় ১৫০০ রিজার্ভ সেনা সহ স্ট্যান্ডবাই শতাধিক সৈন্য জড়িত রয়েছেন।