বার্তা ডেস্ক :: মেয়ে টেলিভিশন অভিনেত্রী। অভিজাত পণ্যের মডেল হওয়ার সুবাদে টেলিভিশনে দেখা যায় নিয়মিত মুখ। ছেলেরা প্রতিষ্ঠিত, এমন মা ঘুরছেন পথে পথে।  আরো বিস্ময়কর তথ্য হলো- ওই নারীর বাবা সাবেক বিচারপতি। তুহিন সুলতানা তপু নামের ওই নারীকে নিয়ে পুরো সিনেমার গল্পের মতোই আলোচনা চলছে। ‘সাহায্যের আবেদন…. আমরা বাঁচতে চাই, আমি পড়াশোনা করতে চাই…. সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন….’ এসব লেখা প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় ফুটপাতে ভিক্ষা করছিলেন একজন ষাটোর্ধ্ব নারী। সঙ্গে কিশোরী কন্যা। নানা রোগে আক্রান্ত, কিন্তু কণ্ঠে দারুণ জোর। আর এটা দেখেই স্বপ্ন নামের এক যুবক ভিডিও ধারণ করেন। পরে তিনি তার পেইজে আপলোড করেন ভিডিওটি। হু হু করে ভাইরাল হতে থাকে এই ভিডিও।

আর এই ভিডিও নিয়ে শুরু হয়ে যায় হৈচৈ। মেয়ে নায়িকা না হলেও একজন আর বাবা সাবেক বিচারপতি এটাও ঠিক আছে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? এ নিয়ে নিউজ বাংলা নামের একটি অনলাইন পোর্টাল অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, ওই নারীর সঙ্গে তাঁর স্বামী ফখরুজ্জামানের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে ১২ বছর আগে। স্ত্রী তুহিন ব্যবসায়ী পার্টনার লিটনের সঙ্গে পরকীয়ায় যুক্ত- এটা মানতে না পেরে স্বামী তাইওয়ান চলে যান, সেখান থেকে চলে যান নিউজিল্যান্ড। দেশে তার দুই সন্তানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। আর ওই নারী, যার নাম তুহিন, তার সঙ্গে এখন যে মেয়েটি রয়েছে তার পিতা লিটন।

বিদেশে যাওয়ার পর ফখরুজ্জামান তার দুই সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য টাকা পাঠাতেন। তবে সেই টাকার পুরোটাই নিজের বিলাসী জীবনের জন্য তুহিন খরচ করতেন বলে অভিযোগ করেন অবনী। এ নিয়ে বিরোধের জেরে প্রায় সাত বছর আগে মায়ের ঘর ছেড়ে চলে যান অবনী-অনিন্দ্য। অবশ্য তুহিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় থাকেন এবং কোথাও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন না। বাবার বাসা থেকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আসেন বলে দাবি পরিবারের। নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে তুহিনের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিকাশ নম্বর দিয়ে অর্থ সংগ্রহের কৌশল ক্রমাগত পরিবর্তন করেন তিনি। 

অবনীর বরাত দিয়ে পোর্টালটি জানায়, জনশক্তি রপ্তানিতে জড়িত লিটনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর তিনিও নিরুদ্দেশ হন। এর পরই অর্থসংকটে পড়েন তুহিন। বিচারপতি বাবার বাড়ি থেকে প্রায়ই আর্থিক সাহায্য আনতেন। মায়ের গয়না এনে বিক্রি করার ঘটনাও ঘটেছে। এসব নিয়ে বিরোধ তৈরি হয় ভাই-বোনের সঙ্গে, ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় বাবার বাড়ির দরজা।

মেজো মেয়ে তুহিনকে নিয়ে বিব্রত বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ওই নিউজ পোর্টালকে বলেন, ‘ও (তুহিন) ছোটবেলা থেকেই লোভী। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করার কথা বললেও আসলে সে এসএসসিও পাস করতে পারেনি। আমি ওর বাবা হয়েও বলছি, ওরে তিনবার ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেওয়াইছি, তিনবারই ফেল করেছে। একটা ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু তার সঙ্গে সংসার টেকেনি। ও আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ওর সঙ্গে এখন যে মেয়েটি আছে তার বাবার নাম আব্দুস সামাদ লিটন। আর আমরা বিয়ে দিয়েছিলাম যার সঙ্গে সে এখন নিউজিল্যান্ডে থাকে। বিদেশে থাকলেও ওর সঙ্গে আমাদের এখনো যোগাযোগ আছে।’

বিচারপতি বাবা বলছেন, তুহিন প্রচণ্ড লোভী হওয়ায় বাসায় এলেই চুরি করত। সর্বশেষ এসে ১০টি মোবাইল চুরি করেছে। তুহিনের বেপরোয়া জীবনের তথ্য জানিয়ে সুমি বলেন, ‘সে তার প্রথম স্বামীকে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে যদিও তার বিয়ে হয়নি, তাকেও পিটিয়ে বের করে দিয়েছে। এখন তার সঙ্গে যে মেয়েটি আছে, তাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে।’ জানা গেছে, তুহিন এখন টাঙ্গাইলে অবস্থান করছে।-কালের কণ্ঠ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn