ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সুযোগ চান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাজ্যে ভিসা সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় (টিওইআইসি) প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বহু বাংলাদেশিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীরা সেখানে বসবাসের অনুমতি চেয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদকে একটি চিঠি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দেওয়া ওই চিঠিতে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য থাকার অনুমতি চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ২০১৪ সালে বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ব্রিটিশ কলেজগুলোতে টেস্ট অব ইংলিশ ফর ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন (টিওইআইসি) পরীক্ষায় প্রতারণার কিছু চিত্র উঠে আসে। এ ঘটনায় তদন্তে নামে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা ৩৩ হাজার ৭২৫টি পরীক্ষার ফল অবৈধ বা অকার্যকর ঘোষণা করে। এছাড়া ২২ হাজার ৬৯৪টি পরীক্ষার ফল প্রশ্নবিদ্ধ বলে সিদ্ধান্ত দেয়। যাদের ফল প্রশ্নবিদ্ধ ছিল তাদেরকে রিভিউ-এর সুযোগ দেওয়া হলেও অন্যদেরকে কোর্স বাতিল করতে বলা হয়। এমনকি অনেককে স্বদেশে ফেরতও পাঠানো হয়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরব হয়ে ওঠে অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা ব্রিটিশ সংগঠন মাইগ্রেন্ট ভয়েস। তাদের তৎপরতার জেরে গত মাসে এই ইস্যুতে তদন্ত শুরু করে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিস। চিঠিতে লেখা ছিলো, ‘২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের মতো হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে ভিসা সুবিধা কেড়ে নেয়, আমাদের অধিকার কেড়ে নেয়। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমরা ইরেজি পরীক্ষায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছি। আমরা নির্দোষ, কিন্তু সেটা প্রমাণের কোনও সুযোগ সরকার আমাদের দেয়নি। আমরা গত পাঁচ বছর ধরে নিদের নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য লড়াই করে যাচ্ছি।চিঠিতে সাজিদ জাভিদকে উদ্দেশ্য করে আরও বলা হয়, ‘আপনি এমন একটি দফতরের নেতৃত্ব দেন যা আমাদের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে, আমাদের ভবিষ্যত কেড়ে নিয়েছে। তারা্ আমাদের প্রতারক বলছে, সারাজীবন আমাদের এই অপমান সহ্য করতে হবে। অথচ তাদের যুক্তির পক্ষে কোনও প্রমাণই দেখায়নি তারা।’গত মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিসের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, টিওইআইসি প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বহু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রতারণার অভিযোগে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের কাজে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর। সে কারণে ভুল করে অনেক নিরাপরাধ শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল হয়েছে। সাজিদ জাভিদ আগেই বলেছিলেন যে তিনি এই কেলেঙ্কারি সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি ও আলামত খতিয়ে দেখছেন। এই বিষয়ে হাউস অব কমন্সে ভাষণও দেবেন তিনি।মাইগ্রেন্ট ভয়েসের পরিচালক নাজেক রামাদান বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাই যেন তিনি শিক্ষার্থীদের কথা শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন। আর এই ঘোষণায় দেরী করাও উচিত হবে না। তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকটা দিন উদ্বেগের সঙ্গে কাটায়। তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারা এখন মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। অনেকে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছেন।