মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী-

বাংলাদেশ ছিটমহল ফিরে পেলেও আজোবধি ফিরে পায়নি দোয়ারাবাজারের প্রায় ৫শ’ একর ভূমি। উপজেলার সীমান্ত এলাকার থাবলী, শ্যামারগাঁও, ঘিলাতলী, শ্রীপুরসহ বেশ কয়েকটি মৌজার ভূসম্পত্তি বর্তমানে ভারতের দখলে রয়েছে। পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশি জনবসতি উচ্ছেদ করে ভারত তাদের দখলে নিয়ে যায়। ১৯৫২ সালের এসএ রেকর্ডেও বিশাল এই ভূসম্পত্তি বাংলাদেশি লোকজনের নামে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু আজো সীমান্ত এলাকার ভূমি ফিরে পায়নি দোয়ারাবাজারের মানুষ। ১৯৬৫ সালে বর্তমান দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্ত এলাকা পাক-ভারত সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে বড় ধরনের এক সীমান্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বর্তমান উপজেলা সীমান্তের থাবলী মৌজাসহ শ্রীপুর, শ্যামারগাঁও মৌজাস্থ বিশাল ভূ-সম্পত্তি ভারত জবর দখল করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ভূমি জবর দখলের অভিযোগ এনে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে আপত্তি দায়ের করে। এই সম্পত্তি এখনো ভারতের দখলে রয়েছে।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৬৬ সালে এই সকল মৌজার অর্ন্তগত প্রায় দেড় শতাধিক হাল জমির বিশাল এলাকা জুড়ে ভারত বর্ষে ইংরেজ শাসনামলে জমিদারদের কাছ থেকে কবুলিয়ত দলিল এবং পাট্টা মূলে মালিক হন এবং সীমান্ত এলাকার ২৩৮  নং পিলার হতে ১২৪২ নং পিলার পর্যন্ত জনবসতি গড়ে উঠে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এই এলাকা পাকিস্তানের বসতি ও সীমানার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ১৯৬৫ সালে ভারত সীমান্ত অঞ্চল থেকে বসতি উচ্ছেদ করে দেয়। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চরম সীমান্ত বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে গোলাগুলি ও  যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরে এই এলাকার লোকজন বর্তমান শ্রীপুর, জাহাঙ্গীরগাঁও, শ্যামারগাঁওসহ সীমান্ত এলাকার বর্তমান বাংলাদেশের সীমানায় এসে বসতি স্থাপন করেন।

১৯৭৬ খ্রিঃ পর্যন্ত বিশাল এলাকার ভূ-সম্পত্তি পতিত থাকে। ১৯৭৬ খ্রিঃ বাংলাদেশ সরকার এই ভূমির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ না হওয়ায় ভারত একই দিনে পতিত জমিগুলো স্থায়ীভাবে দখল করে নেয়। ১৯৫২ সালের এসএ রেকর্ডে এখনো বাংলাদেশি লোকজনের নামে রেকর্ড রয়েছে। বর্তমান দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, শ্যামারগাঁও, সোনাইত্যা, ঘিলাতলী এবং ভারতের উনকাবাও, কালাটেক বস্তির মধ্যবর্তী ১২৩৮ পিলার হতে ১২৪২ সীমান্ত পিলারের নিকবর্তী ভূ-সম্পত্তি ভারতের দখলে আছে এবং ভারত তাদের সীমানা নির্ধারণ করে। এই জায়গাগুলো ডিসপোর্ট (আপত্তি) ভূমি নামে পরিচিত। জানতে চাইলে দোয়ারাবাজারের ইউএনও এর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, সীমান্ত এলাকার জমি দখলের বিষয়টি খতিয়ে দেখে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn