ভারতে মুসলিমদের হজের ভর্তুকি বাতিল
ভারতে চলতি বছর থেকে যে মুসলিমরা হজে যাবেন, তাদের জন্য আর্থিক ভর্তুকি পুরোপুরি উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সরকার গতকাল মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ২০২২ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে এই ভর্তুকি তুলতে হবে। কিন্তু তার পাঁচ বছর আগেই এক ধাক্কায় সরকার তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিল। ভারতের সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি এ কথা জানিয়ে বলেছেন, এখন থেকে হজ ভর্তুকির টাকা মুসলিম মেয়ে ও নারীদের শিক্ষার পেছনে খরচ করা হবে। ভারতে মুসলিম সমাজের নেতারা অনেকেই এভাবে একবারে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার বিরোধী হলেও তাদের কেউ কেউ আবার সরকারি ঘোষণাকে স্বাগতও জানিয়েছেন। ভারতে হজযাত্রীরা যাতে জাহাজের বদলে বিমানে চেপে সৌদি যেতে পারেন, সে কারণে ভর্তুকি দেওয়ার প্রথা চালু হয়েছিল প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে। এয়ার ইন্ডিয়া বা সৌদিয়ার মতো যে বিমান সংস্থাগুলো ভারত থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে পাড়ি দেয়, তখন থেকেই তারা এই ভর্তুকির টাকা সরকারের কাছ থেকে সরাসরি পেয়ে আসছে। কিন্তু চলতি বছর থেকেই এই ভর্তুকি উঠে যাবে বলে সরকার গতকাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, ২০১৮ থেকেই আর কোনো হজ ভর্তুকি থাকবে না। তবে তারপরও যেটা খুশির খবর তা হল, স্বাধীনতার পর এ বছরেই সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী ভারত থেকে যাবেন যা ১ লাখ ৭৫ হাজার। আর এই ভর্তুকির টাকাটা আমরা খরচ করব মুসলিম মেয়ে ও নারীদের পড়াশুনোর পেছনে, যাতে তাদের শিক্ষাগত ক্ষমতায়ন হয়।
হজ ভর্তুকি তুলে নেওয়া হলে অপেক্ষাকৃত গরিব মুসলিমরা তীর্থযাত্রার সুযোগ হারাবেন এ কথাও মানছেন না নকভি। তার যুক্তি, আমরা যখন মর্যাদার সাথে উন্নয়নের কথা বলি, তখন হজযাত্রাও কিন্তু মর্যাদার সঙ্গেই হওয়া উচিত। আর এই ভর্তুকিতে মুসলিমদের বিশেষ কোনো উপকার হত না, লাভবান হত শুধু কিছু সংস্থা। আর দরিদ্র শ্রেণীর মুসলিমরা যাতে অনেক কম খরচে হজে যেতে পারেন, তার জন্য আগামী দিনে সমুদ্রপথে জাহাজে চেপে যাওয়ার ব্যবস্থাও আবার চালু হচ্ছে, জানিয়েছেন নাকভি। সরকারের এই ঘোষণা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত নাহলেও ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পর হজযাত্রায় এখন কত খরচ পড়বে, সেটা স্পষ্ট না করায় বিভ্রান্তির অবকাশ কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। তেমনটাই বলছিলেন পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটির চেয়ারম্যান ও তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি নাদিমুল হক।