ভালবাসার বুনো ফুল-
তন্দ্রা রয় (ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)
মানুষের মাঝে এমন কিছু ভালোবাসার সম্পর্কের সৃষ্টি হয় যার কোন নাম হয়না। অনেকটাই পাহাড়ী রাস্তার পাশে ফুটে থাকা নাম না জানা ফুলের মতো । নামহীন। গন্ধহীন। গোত্রহীন । কিন্তু কি অনিন্দ্য সুন্দর দেখে মুগ্ধতা জাগে। ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে ভীষণ। সুবাশে মাতাল হয় মন ভালোলাগা- ভালোবাসায়। যে মেয়েটা আমার লেখা পড়ে আমার জন্য কান্না করে- লিখে পাঠায় কান্না থামাতে পারছিনা। কষ্ট হয় তোমার জন্য এটাও তো ভালোবাসা। যে ছেলেটা আমার হাতের রেশমী চুড়ি দেখে মুগ্ধতা নিয়ে তার বউয়ের জন্য এক গাঁছি চুড়ি কিনে তার ছবি তুলে পাঠায়, সাথে সলজ্জ দু’লাইন। বউয়ের জন্য কিনলাম। সেটাও ভালোবাসা। বৃষ্টিভেজা সকালে যে নিজের শত ব্যাস্ততার মাঝেও বৃষ্টির ঘ্রাণে মাতাল আমায় গুণের কবিতা পড়ে শোনায় তা তো ভালোবাসাই। রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া শিউলি ফুল যত্ন করে পৌঁছে দেয় আমার হাতে যে মেয়ে সেতো আমায় ভালোবেসেই তা করে। পাগলামী আর ছাগলামীর কম্বিনেশন ভ্যাবলামীর মতো সূত্র দিয়ে যে জটিল সময়কে সহজ করে দেয় তাতো ভালোবাসাই। কাঁদতে হলে ঈশ্বরের কাছে কাঁদুন। মানুষের কাছে কেন ? বলে যে সাহস যোগায় মনে তাও তো ভালোবেসেই করে। ভালোবাসাই তো। প্রতিটা মানুষের জীবনেই কিছু দুঃসময় আসে। যখন তার চারপাশের সবকিছুই বড় বিষাক্ত মনে হয়। চেনা মানুষগুলোও অচেনা মনে হয়। দু:সময় তখন সাঁড়াশীর মতো চেপে ধরে শ্বাস প্রঃশ্বাস। বেঁচে থাকাটাও অর্থহীন মনে হয়। সব আনন্দ গুটিয়ে নেয় নিজেকে শামুকের মতো খোলসের ভিতর। তখন এই সম্পর্কগুলো সঞ্জীবনি সুধার কাজ করে কোন প্রাপ্তির আশা না করেই। নাম না জানা এই বুনো ফুলের মতই এই সম্পর্কগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা ভিষণ প্রয়োজন। কিছুতেই তারা যেন নিশি পুস্পের মতো সারারাত গন্ধ ছড়িয়ে ভোরের আলোয় ঝরে না পড়ে। বেঁচে থাক তারা তাদের মতই স্বমহিমায়।