ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে রোটারী কাজ করবে -ড. মুহাম্মদ সাদিক
পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাদিক বলেছেন, বাংলাদেশের একটি সংবিধান, একটি মানচিত্র ও একটি পতাকাকে রচনা করতে যেভাবে এদেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে, দুই লক্ষ মা বোন ইজ্জ্বত হারিয়েছে, সেভাবে বাংলাদেশকে গড়তে রোটারিয়ানরা কাজ করে যাবে। রোটারী বন্ধুত্ব, সহযোগিতায় কিংবা পারস্পরিক অনুপ্রেরণা প্রদানে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে তা নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীলতায় উদ্বুদ্ধ করবে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে রোটারী আজীবন মানবতার জন্য কাজ করে যাবে।
রোটারী ক্লাব অব জালালাবাদ-এর উদ্যোগে গত শুক্রবার সিলেট স্টেশন ক্লাবের হল রুমে আয়োজিত ক্লাবের ৩৩তম অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি রোটারিয়ান এডভোকেট মুজাক্কির হোসেন কামালী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি রোটারিয়ান হানিফ মোহাম্মদ। অভিষেক অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি প্রফেসর ডা. আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রোটারী ডিস্ট্রিক্ট নমিনী রোটারিয়ান লে. কর্নেল (অব) এম. আতাউর রহমান পীর, ক্লাবের এসিস্ট্যান্ট গভর্নর রোটারিয়ান পিপি প্রফেসর ড. তোফায়েল আহমদ। অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান এডভোকেট মুজাক্কির হোসেন কামালী দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান হানিফ মোহান্মদের কাছে কলার হস্তান্তর করেন এবং বিদায়ী সেক্রেটারী রোটারিয়ান রুমেল এম এস পীর নির্বাচিত সেক্রেটারী মাহবুবুল আলম মিলনের কাছে ক্লাব চার্টার হস্তান্তর করেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সেক্রেটারী মাহবুবুল আলম মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিদায়ী সেক্রেটারী রোটারিয়ান রোমেল এম এস পীর গত ১৬-১৭ সেশনের সেক্রেটারী রিপোর্ট পেশ করেন। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে রোটারী ক্লাব অব জালালাবাদ একটি অসাধারণ প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করে। অনুষ্ঠানে রোটারী ক্লাব জালালাবাদের অর্থায়নে কৃত্রিম পা সংযোজন কেন্দ্র থেকে দূর্ঘটনায় পা হারানো দুইজন মেধাবী শিক্ষার্থীর মধ্যে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়। কৃত্রিম পা সংযোজনের লক্ষ্যে একটি ¯øাইড দেখানো হয়। ¯øাইডটি পরিচালনা করেন ডা. এস এম সাইদুর রহমান। এই প্রজেক্টের কারণে রোটারী জালালাবাদ প্রধান অতিথিসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করেন। কৃত্রিম পা সংযোজনের সময় পুরো হলরুমে এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রোটারিয়ান পিপি সিরাজুল ইসলাম ফারুক এবং অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রোটারিয়ান পিপি শফিক আহমদ বখত এবং রোটারী প্রত্যয় পাঠ করেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমদ মতিন। এছাড়া অভিষেক অনুষ্ঠানে রোটারী ক্লাব অব জালালাবাদে চারজন্য নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হন। তাঁরা হলেন, রাশেদা নাজনীন, শম্পা বেগম, জুনেদ আহমদ, জালাল উদ্দিন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রজেক্টর রিপোর্ট পেশ করেন যথাক্রমে রোটারিয়ান পিপি মাহবুব সোবহানী চৌধুরী, রোটারিয়ান মিজানুর রহমান, রোটারিয়ান আখতার হোসেন, রোটারিয়ান লতিফা জাহাঙ্গীর, রোটারিয়ান ইমরান কামাল বুলবুল। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দের পরিচয় তুলে ধরেন রোটারিয়ান পিপি নিরেশ চন্দ্র দাশ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিলেট সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আতাউর রহমান, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব) ডা. তোজাম্মেল হকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রোটারী ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর নমিনী লে. কর্নেল(অব) এম. আতাউর রহমান পীর বলেন, রোটারিয়ানরা মানুষ ও মানবতার জন্য নিবেদিত প্রাণ। আমি আমার স্বপ্ন আপনাদের কাছে শেয়ার করতে চাই। আল্লাহ সুস্থ রাখলে রোটারীর সাতটি জোনে আমি সাতটি এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করবো এবং সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে তিনটি ক্লিনিকসহ রোটারী অরফানেজ গড়ে তুলে মানবতার জন্য আজীবন কাজ করতে চাই। সভাপতির বক্তব্যে ক্লাব সভাপতি রোটারিয়ান হানিফ মুহাম্মদ বলেন, সকলের সহযোগিতায় ও আন্তরিকতায় আমার দায়িত্বকালে ক্লাবকে একটি অনন্য ক্লাব হিসেবে গরে তুলতে চেষ্টা করবো। মানবতার কল্যাণের ব্রত নিয়ে কাজ করলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।