ভুয়া তথ্যে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন রোহিঙ্গারা!
সম্প্রতি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার একটি বাসা থেকে ২৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। জানা গেছে, তাদের বিদেশে পাচারের জন্য বাংলাদেশি সাজানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছিল। এই চক্রের মূল হোতা হাজি ইব্রাহিম খলিল ও আবদুস সবুর ওরফে রহিমের খোঁজে মালিবাগের একটি বাসায় অভিযান চালায় ডিবি। সেখানে পাচারচক্রের কোনো সদস্যকে পাওয়া না গেলেও ৫৪টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা ৫৪টি পাসপোর্টে বেশিরভাগ ব্যক্তিকেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা দেখানো হয়েছে। এছাড়া কয়েকজনকে ফেনী, নোয়াখালী, পাবনা, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নড়াইল, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, গাজীপুর এবং ঢাকার বাসিন্দা হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এনামুল হক, মোহাম্মদ ইউসুফ ও মোহাম্মদ সাদেককে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বাসিন্দা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া জাহিদ হোসেনকে বলা হয়েছে সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে আরও আছেন আনোয়ার সাদেক, জাবের, রোকনু, দেলোয়ার হোসেন রাজু, এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম, আলম মোহাম্মদ মোস্তাকিম, সোনিয়া, জসিমউদ্দিন, ইরফান, সাখাওয়াত হোসেন, হামিদুল হক, সিদ্দিক, আরিফ, আবদুল মোত্তালিব, রাশিদা আক্তার, সালমা বেগম, রাশিদা বেগম, সুফিয়া আক্তার, শিফা আক্তার, সালমা আক্তার, সাদেকা বেগম চৌধুরী, খুর্শিদা বেগম, সুমি আক্তার, মাজিদা বেগম, ওমর, শফি, আয়েশা আক্তার, সাজু, রফিকা আক্তার, মিসেস আয়শা ও নূর হাসিনা। এদিকে উদ্ধার হওয়া একাধিক পাসপোর্টের কোনো তথ্যেরই সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আয়েশা বেগমের নামে ইস্যু করা ইএ-০৩০৬৭৫৮ নম্বর পাসপোর্টে তার জন্মস্থান বলা হয়েছে ঢাকায়, জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১৯৮৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি।
গত ৬ এপ্রিল ইস্যু করা পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৫ এপ্রিল। এতে কুষ্টিয়া ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশীদের সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। ইএ-০৩৭৪০৩৮১ পাসপোর্টে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে দেখানো হয়েছে মিনারা বেগমকে। এই নারীর বাবা ও মায়ের নাম লেখা হয়েছে যথাক্রমে বদি আলম ও মাকসুদা বেগম। কুষ্টিয়া ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অফিসের ইস্যু করা। ডালিয়া নাসরিন লিজার নামে ইস্যু হওয়া ইএ-০১৯৬২৭৪৭ পাসপোর্টে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে ঢাকার উত্তরার জোনের উপসহকারী পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামের। এতে লিজার স্থায়ী ঠিকানা বলা হয়েছে, গাজীপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খৈলকুর এলাকায়। তবে এসব পাসপোর্টে দেয়া মোবাইল ফোন নম্বরের সঙ্গে পাসপোর্টধারী ব্যক্তির কোনো তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি। ডিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে অনেক রোহিঙ্গা নাগরিক মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। তবে তাদের প্রকৃত সংখ্যা কত হবে, সে বিষয়টি তদন্তের পর জানা যাবে।