মাটির টানে অসহায় মানুষের পাশে
প্রায় ২২ বছর থেকে টানা প্রবাসে। কিন্তু মাটির টান ভুলেননি এখনো। দেশে থাকাকালীন বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে ছিলেন। করোনা ভাইরাস সংকটে দেশে হঠাৎ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত এবং খেটে খাওয়া মানুষজন অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই লোকগুলোর আর সংসার চলে না। এ বাস্তবতার খবরে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি আমেরিকা প্রবাসী তরুণ কামরুজ্জামান উজ্জল। দুর্দিনে প্রবাসে থেকেও দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নিজ উদ্যোগে তার উপজেলার কর্মহীন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত এবং স্বজনদের মাঝে প্রায় ৮ লাখ টাকা বিতরণ করেন। সহযোগিতাকারি উজ্জলের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজিটেকা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মরহুম হাজী মুন্সি মছদ্দর আলীর ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমেরিকা প্রবাসী তরুণ কামরুজ্জামান উজ্জল প্রায় ২২ বছর আগে সেখানে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমান। এরপর আর দেশে আসেননি। দেশে থাকাকালীন নানা সংকটে মানুষের পাশে ছিলেন। এলাকার কমবেশি সবাইকেই চিনেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর থেকেই জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। লকডাউনে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত এবং খেটে খাওয়া মানুষজন অসহায় হয়ে পড়েন। অনেকদিনের চেনাজানা এই মানুষগুলোর অসহায় খবর দূর প্রবাসে তাকে পীড়া দেয়। কামরুজ্জামান উজ্জল আর নীরব থাকতে পারেননি। দেশে থাকা স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের মাধ্যমে এরকম মানুষের তালিকা তৈরি করেন। এরপর তাদের নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। শনিবার (১৬ মে) তার উদ্যোগে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে ১৩৩ জনকে, ১৭ জনকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা ও ১১০ জনকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর আগে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আরো ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা সহায়তা দেন।
এই দিন দুপুরে বড়লেখা পৌর শহরের গাজিটেকা ষাটহাল এলাকায় নগদ অর্থ বিতরণকালে এলাকার প্রবীণ মুরব্বি হাজীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হাজী আলাউদ্দিন ডিলার, বড়লেখা পৌরসভার সাবেক মেয়র ফখরুল ইসলাম, কোয়াবের সভাপতি ছালেহ আহমদ জুয়েল, স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী হারুন আহমদ, কামরুল ইসলাম, সাইফুল আলম খোকন, জামিল হোসেন, নোমান আহমদ, জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিতরণে উপস্থিত থাকা কোয়োবের সভাপতি ছালেহ আহমদ জুয়েল বলেন, ‘তিনি স্থানীয় সাংসদ ও পরিবেশ মন্ত্রীর মামা। দেশে থাকাকালীন নানা সংকটে মানুষের পাশে ছিলেন। টানা ২২ বছর থেকে প্রবাসে আছেন। কিন্তু শেকড় ভুলেননি। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশে সাময়িক অসুবিধাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্বজন ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ টাকার সহযোগিতা করেছেন। তার এ সহযোগিতা আমাদের সকলের জন্য অনুকরণীয়। বিত্তবানরা এভাবে এগিয়ে আসলে সংকটে মানুষ ভরসা পাবে।’