পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আম্বিয়া খাতুন (৩৪)। ২০১৯ সনের জুলাই মাসে রিক্রুটিং এজেন্সি এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের (আরএল-১১৬৬) মাধ্যমে জর্ডান যান তিনি। ১ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় মানসিক অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরত আসেন তিনি। এরপর বিমানবন্দরের ভিতরে নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরা করতে থাকেন আম্বিয়া। তার নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরা দেখে বিমানবন্দর আর্ম পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ককে অবহিত করেন। এরপর ডেস্ক থেকে পরিবারের সন্ধান ও আবাসনের জন্য সোমবার (২ নভেম্বর) ভোরে ব্র্যাকের কাছে হস্তান্তর করা হয় আম্বিয়াকে। বিমানবন্দর থেকে আম্বিয়াকে ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার নেওয়া হয়, বর্তমানে আম্বিয়া সেখানেই আছে। আম্বিয়ার মত মানসিক অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরা কর্মীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী এভাবে মানসিক অসুস্থ হয়ে গত একমাসে ফিরেছেন ১১ কর্মী। তাদের মধ্যে ১০ জনই নারী গৃহকর্মী। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও বিমানবন্দরের পুলিশের সহায়তায় ব্র্যাক গত দুই বছরে মানসিক অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরত ৬৩ কর্মীকে পরিবার খুঁজে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এর মধ্যে নারী কর্মী ছিলেন ৫৮ জন পুরুষ ৫ জন।

অপরদিকে সোমবার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় মানসিক অসুস্থ হয়ে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন ইয়ানুর রহমান (৩৫)। ইয়ানুর রহমান যশোর জেলার সারশা উপজেলার সোনাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারের সাথে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে যোগাযোগও হয়েছে। স্বজনরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনাও দিয়েছেন। এরপর ডেস্ক থেকে ইয়ানুরকে হস্তান্তর করা হয় ব্র্যাকের কাছে। ইয়ানুর বর্তমানে ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে অবস্থান করছে। ইয়ানুর ভারত হয়ে পাসপোর্টে দুবাইয়ে কোন ভিসা ছাড়াই দুবাই গমন করেন। ভুক্তভোগীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয়েছে উভয়ের স্বজনরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান বলেন, এভাবে মানসিক অসুস্থ হয়ে গত একমাসে ফিরেছেন ১১ কর্মী, তাদের মধ্যে ১০ জনেই নারী গৃহকর্মী। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও বিমানবন্দরের পুলিশের সহায়তায় আমরা গত দুই বছরে মানসিক অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরত ৬৩ কর্মীকে পরিবার খুঁজে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এর মধ্যে নারী কর্মী ৫৮ জন পুরুষ ৫ জন। এর বাইরে বিদেশ ফেরত অনন্ত তিন হাজার মানুষকে আমরা সাইকো সোশাল কাউন্সিলিং দিয়েছি। আমাদের ১৫ জন কাউন্সিলর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের নাসিরউল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট এই কাজটি করছে। আসলে বিদেশ ফেরতদের মানসিক সুস্থতার দিকে আমাদের আরও বেশি নজর দেয়া দরকার। সরকারি সংস্থা ও বেসরকারিভাবে মিলে এই কাজটি করতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn