মালয়েশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পেনাং প্রদেশের নির্মাণাধীন একটি সাইটে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাংলাদেশিসহ ৩ বিদেশি শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। আরও ১২ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে, যাদের প্রাণহানির শংকা প্রকাশ করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে পেনাংয়ের জর্জ টাউন এলাকায় এ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ভূমিধসের ঘটনায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই ইন্দোনেশীয় ও মিয়ানমারের এক শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুই শ্রমিক আহত অবস্থায় বেরিয়ে এসেছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ের বিশাল একটি টিলা ওই নির্মাণখাতে ধসে পড়েছে; যেখানে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা আনুয়ার ওমর বলেন, কাদা থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১২ শ্রমিক। হতাহতের শিকার শ্রমিকরা বিদেশি বলে ধারণা করছেন তিনি। পেনাং দ্বীপ সিটি কাউন্সিলের মেয়র মাইমুনাহ শরিফ বলেন, দুর্ঘটনার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বৈরী আবহাওয়া ও ওই এলাকায় গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের আশংকা তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। পেনাং ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধার বিভাগের পরিচালক সাদন মোখতার বলেন, হতাহতদের খুঁজে বের করতে আমরা ঘটনাস্থলে কে-৯ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করেছি। নিখোঁজ শ্রমিকদের অধিকাংশই বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়ার বলে ধারণা করছেন তিনি। এছাড়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শ্রমিকও রয়েছেন। ভূমিধস স্থলে ৪৯ তলাবিশিষ্ট দুটি টাওয়ার নির্মাণের কাজ চলছে। ধসের কারণ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

পেনাংস্থ বাংলাদেশের অনারারি কনসাল জেনারেল দাতো ইসমাইল জানান,  আজ সকালে নির্মাণাধীন ভবনের মাটি ধসে গেলে ১৪ জন কর্মী নিখোঁজ হন। ফায়ার সার্ভিস কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করেছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের দুজন হতে পারে মর্মে পুলিশ ধারণা করছে।মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হতে পুলিশ এদের নিয়োগকর্তাকে খুঁজছেন।  এ মুহূর্তে পাসপোর্ট না থাকায় পুলিশ জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত নয়। আরও কেউ আটকা আছে কিনা খোঁজ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে আরও দুই দিন সময় লাগবে। তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে শ্রম কাউন্সিলর (শ্রম) মো. সায়েদুল ইসলাম জানান, ‘ কতজন নিহত হয়েছেন এবং নিহতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশের নাগরিক আছেন- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, পুলিশের সঙ্গে  যোগাযোগ অব্যাহত আছে। এ ধরনের বিপজ্জনক কর্মপরিবেশে কাজ করানোর ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন কেন মেনে চলা হয়নি তার জবাব এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। আর যতদ্রুত সম্ভব দেশে লাশ পাঠানো হবে। ‘

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn