মুগাবেকে জিম্বাবুয়ের সরকারী দল থেকে বহিষ্কার
খবরে বলা হয়, দলের নেতা হিসেবে বরখাস্ত হলেও, এখনো জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন রয়েছেন মুগাবে। তবে ১৫ই নভেম্বর সামরিক অভ্যুথানের পর থেকে তার পদত্যাগের জন্য চাপ বাড়ছে। জানু-পিএফ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জিম্বাবুয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওবার্ট এমপোফু। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট মুগাবের পতনের জন্য ফার্স্ট লেডি গ্রেজ মুগাবে ও তার সহযোগীরা দায়ী। দলের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এখানে একটি ভারি হৃদয় নিয়ে হাজির হয়েছি। কারণ, মুগাবের স্ত্রী ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা প্রেসিডেন্টের দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিয়েছে ও এই দেশের সমপদের অপব্যবহার করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে এই ঐতিহাসিক বৈঠকে সাদর অভ্যর্থনা জানাই। এই বৈঠক একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটাবে। শুধু দেশের জন্যই নয়, আমাদের দলের জন্যও।’ যখন মুগাবের বরখাস্তের ঘোষণা দেয়া হয়, তখন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা উল্লাস করেন। এদিকে, রোববারের শুরুর দিকে জানু-পিএফ দলের গ্রেস মুগাবের নেতৃত্বাধীন অঙ্গ-সংগঠন ‘জানু-পিএফ ইয়ুথ লিগ’ দল থেকে গ্রেস মুগাবেকে চিরতরের জন্য বরখাস্ত করার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি তারা, প্রেসিডেন্ট মুগাবেকে দেশের ও দলের নেতা হিসেবে পদত্যাগ করার দাবি জানায়- যাতে করে তিনি একজন প্রবীণ কূটনীতিক থাকতে পারেন। সংগঠনটি সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট মনাঙ্গাগওয়ার প্রক্রিয়াবিহীন বরখাস্তের প্রতি নিন্দা জানায়। জিম্বাবুয়ের ন্যাশনাল লিবারেশন ওয়ার ভেটারানস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ক্রিস মুটসভাংওয়া সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর উচিত মুগাবের সঙ্গে সব ঝামেলা আজকেই চুকিয়ে নেয়া। মুগাবের হার মেনে নেয়া দরকার। এর আগে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যম দেশটিতে ক্ষমতার পালাবদল উদযাপন করতে শনিবার লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এতে সরকারি ও বিরোধী উভয় দলের অনুসারী অংশ নেয়। তাদের কয়েকজনকে সেনা সদস্যদের সঙ্গে আলিঙ্গন করতেও দেখা গেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। মুগাবের ক্ষমতায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। স্বেচ্ছায় পদত্যাগে রাজি না হলে আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে তিনি অভিশংসনের মুখোমুখি হতে পারেন। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে জানু-পিএফ পার্টির নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বুধবার সেনাবাহিনী দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে মুগাবে নিজের বাড়িতে গৃহবন্দী রয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাংগাগা’কে বরখাস্ত করার পর এই পদক্ষেপ নেয় সেনাবাহিনী। বলা হচ্ছে, স্ত্রী গ্রেজকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্যই ভাইস-প্রেসিডেন্টকে বরখাস্ত করেন মুগাবে। ১৯৮০ সালে বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই দেশটির নেতৃত্বে রয়েছেন মুগাবে।