মেয়েদের ফুটবলে ভারতকে হারালো বাংলাদেশ
মেয়েদের ফুটবলে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০, ভারতের ৫৭। কিন্তু বয়সভিত্তিক ফুটবলে র্যাঙ্কিংটা যে কয়েকটা সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই না, সেটি প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশ। তুলে নিয়েছে ৩-০ গোলের জয়। বাংলাদেশের পক্ষে গোল তিনটি করেছে আনুচিং মারমা, শামসুন্নাহার ও মনিকা চাকমা। পুরো ম্যাচেই একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্কোরলাইনটা তাই সঠিক তথ্যটা দিচ্ছে না। ম্যাচটা যদি বাংলাদেশ ৫-৬ গোলে জয় পেত, তাহলে অবাক হওয়ার থাকত না কিছুই। মাঠের ফুটবলের সব বিভাগেই ভারতের চেয়ে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। শারীরিক যোগ্যতা, বলের নিয়ন্ত্রণ,গতি, পারস্পরিক বোঝাপড়া—সবকিছুতেই। আগের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা ভারতীয় প্রিয়াঙ্কা দেবিকে আজ শুধু মাঠময় দৌড়ঝাঁপ করতেই দেখা গেল। উল্টো দিকে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রত্যেকেই ছিল স্বমহিমায় উজ্জ্বল। শুরু থেকে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে সাজেদা খাতুন চোটে পড়লে মাঠে নামে আনুচিং। পাহাড়ি এই মেয়েটি মাঠে নামতেই ভোজবাজির মতো পাল্টে যায় বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড লাইন। ৩২ মিনিটে আনুচিংয়ের গোলেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মনিকা চাকমার কর্নার থেকে হেডে গোলটি করে আনুচিং। বিরতিতে যাওয়ার আগেই পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে শামসুন্নাহার। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েই বিরতিতে যায় গোলাম রব্বানি ছোটনের দল।
বিরতি থেকে ফিরেই ৫৪ মিনিটে মনিকার প্রায় একক প্রচেষ্টায় গোল করে স্কোরলাইন ৩-০ করেন। আনাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্স ঢুকে দেখে শুনে প্লেসিং। তাঁকে দেখে মনে হলো গোল করা যেন কত সোজা। আজকের এই জয়ে বয়সভিত্তিক মেয়েদের ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক জয় পেল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালে তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বে ভারতকে ৩-১ গোলে আর ফাইনালে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষ। এবার ফাইনালের পালা। এক ম্যাচ হাতে রেখে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল দুই দলই। ২৪ ডিসেম্বর হবে ফাইনাল। তার আগে ভারতকে উড়িয়ে কিন্তু আত্মবিশ্বাসটা ভালোভাবেই বাড়িয়ে নিল বাংলাদেশের মেয়েরা।