যুব ও ছাত্রলীগের হামলায় সরকারি কর্মকর্তাসহ আহত ১১
অটোরিক্সার সঙ্গে বাসের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ ১১ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকার চাঁন সূর্য্য ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বাসের যাত্রীরা সবাই সাভারের বাংলাদেশ লোক ও প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে একটি বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে খাগড়াছড়ি যাচ্ছিল। আহতদের নয়াপুর জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বাস চালকের অবস্থা আশংকাজনক। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইকোনো পরিবহনের একটি বাসে সাভারের বাংলাদেশ লোক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে একটি দল প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। বাসটি এশিয়ান হাইওয়ের চাঁন সূর্য্য ফিলিং স্টেশনের সামনে সাইড নিতে গিয়ে একটি অটোরিক্সার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এসময় বাসের চালকের সঙ্গে অটোরিক্সা চালকের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে অটোচালক উত্তেজিত হয়ে বাসচালক মোসলেউদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় বাসে থাকা এক প্রশিক্ষণার্থী ওই অটোচালককে আটক করে।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও জামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুন নূরের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী বাসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় হামলাকারীরা বাংলাদেশ লোক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোস্তাক আহম্মেদ, নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, সাখাওয়াত হোসেন, লাকী আক্তার, আনোয়ার হোসেন, রোকসানা আফরোজা, শহীদ হোসেন, প্রলয় কুমার বিশ্বাস, বাস চালক মোসলেউদ্দিন, সুপারভাইজার জুয়েল, হেলপার শরীফ হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে। আহতদের নয়াপুর জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বাস চালক মোসলেউদ্দিনের অবস্থা আংশকাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবায়েত হায়াত শিপলু ও সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো. মঞ্জুর কাদের পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশ লোক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মোস্তাক আহম্মেদ জানান, অটোরিক্সার সঙ্গে ধাক্কা লাগার ঘটনায় স্থানীয়রা প্রথমে তাদের বহন করা গাড়িটি ভাংচুর করে। এসময় হামলাকারীরা সরকারী কর্মকর্তাদেরও মারধর করেন। আহতদের মধ্যে বাসচালকের অবস্থা আংশকাজনক। এ বিষয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নয়। একটি মহল তার নাম প্রচার করে তার সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় সাদিপুরের কোন লোকজন জড়িত ছিল না। জামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুন নূর বলেন, তিনি ঘটনার সময় এলাকায়ই উপস্থিত ছিল না। তাছাড়া কি নিয়ে এলাকায় সমস্যা হয়েছে এটিও তিনি জানেন না। সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ মোঃ মঞ্জুর কাদের পিপিএম বলেন, হামলাকারীদের সনাক্ত করতে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।