রাজনীতিতে আসছেন মন্ত্রী এমএ মান্নানের পুত্র সাদাত মান্নান!
জানা গেছে, সাদাত মান্নান অভি ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। বিদেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে বর্তমানে সেখানকার একটি শীর্ষ ব্যাংকের আঞ্চলিক মুখ্য কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করলেও ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতির খোঁজ-খবর রাখেন নিয়মিত। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে তিনি পিতার নির্বাচনী এলাকায় এসে সংক্ষিপ্ত সময় ব্যয়ও করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন পিতাকে। লন্ডনে শেখ পরিবারের রাজনীতির নির্ধারণী মহলের সঙ্গেও সাদাত মান্নান অভির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে এমন কথাও শোনা গেছে। বাংলাদেশেও আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গেও তার দীর্ঘদিনের জানা শোনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নীতিনির্ধারণী মহল ও মনোনয়ন বোর্ডের অনেকের সঙ্গেও মান্নানপুত্রের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে বিশেষ সূত্র জানিয়েছে। মান্নানপুত্রের রাজনৈতিক আগ্রহকে ইতিবাচক দেখছেন সুধীমহল। একজন উচ্চশিক্ষিত, বিনয়ী ও রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি রাজনীতিতে আসলে তা দেশ ও জনগণের জন্য শুভকর এমনটা মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মান্নানপুত্র সাদাত মান্নান অভিকে নিয়ে পরিচিতিমূলক সভা করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাথারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। ওই অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। পরিচিতিসভায় নেতাকর্মীরা আগামীতে এই এলাকায় এসে রাজনীতির হাল ধরার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাকে। নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি পিতার দেখানো পথে মানুষের সুখে দুখে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।
ওইদিনের পরিচিতি সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের পুত্র অর্থনীতিবিদ সাদাত মান্নান অভি বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুরবাসী আমার পিতা এএম মান্নানকে বিপুল ভোটে বারবার বিজয়ী করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। আমার পিতা রাজনীতিতে আসার পর সবসময়ই আপনাদের মঙ্গল চেয়েছেন। চেয়েছেন উন্নয়নে পূর্ণতা এনে দিতে। আমার পিতা তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছেন। আপনারাই বলছেন তিনি আজ সফল। তিনি যেভাবে সুখে দুখে আপনাদের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছেন আমিও তার পুত্র হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই। এই দেশ ও মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি এই দেশেরই সন্তান। আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে এই দেশেই। এই দেশের মানুষকে আমি ভালোবাসি, ভালোবাসি আমার জন্মভূমিকে। এই দেশের মানুষের সুখে দুখে পাশে থেকে সেবা করে যেতে চাই।
তার ওই বক্তব্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত পরিচিতসভার পরই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়- এমএ মান্নান পুত্র অভি রাজনীতিতে আসছেন। বিশেষ করে জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন রাতেই জগন্নাথপুরের অনেক শীর্ষ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এমএ মান্নানের শান্তিগঞ্জস্থ হিজল বাসভবনে এসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাজনীতিতে এলে তাকে সহযোগিতা করবেন এই আশ্বাসও দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক হাসনাত হোসাইন বলেন, আমাদের সজ্জন নেতা এমএ মান্নানের যোগ্য উত্তরসূরী তার পুত্র সাদাত মান্নান অভি। তিনিও তার পিতার মতো আলোকিত মানুষ। রাজনীতিতে তার প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। যতবারই দেশে এসেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে চুটিয়ে গল্প করেছেন। খোঁজ খবর নিয়েছেন রাজনীতির। তিনি রাজনীতিতে আসলে আমরা তাকে স্বাগত জানাব।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, আমরা নেতার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তার সুযোগ্য পুত্রকে চিন্তা করছি। তার প্রতিও তৃণমূল আওয়ামী লীগের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা উচ্চশিক্ষিত, মার্জিত ও বিনয়ী এমন নেতাই চাই। তাছাড়া গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ব্যস্ত সময়ে প্রবাস থেকে এসেও পিতার পক্ষে নীতিনির্ধারণীমূলক কাজ করে আমাদের দৃষ্টি কেড়েছেন।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করলেও আমার ছেলের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ ভীষণ। বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি, নির্বাচন ব্যবস্থা, মনোনয়ন সংক্রান্ত সব বিষয়েই তার ভালো জ্ঞান রয়েছে। লন্ডনের শীর্ষ একটি ব্যাংকের আঞ্চলিক এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অর্থনীতি ও রাজনীতির জটিল বিষয়েও তার ধারণা স্পষ্ট রয়েছে। সে রাজনীতিতে আসতে চাইলে আমি তাকে বাধা দিব না। মানুষের পক্ষে কাজ করাকে আমি স্বাগত জানাই।