রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানান খেলা চলছে
রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, এখন রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানান খেলা চলছে। পরোক্ষভাবে বিদেশি কিছু এনজিও ষড়যন্ত্র করছে। মিয়ানমারকে সহযোগিতা করছে। ওইসব বিদেশি এনজিরও মধ্যে ‘পাকিস্তানপন্থি’ কয়েকটি এনজিও আছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনসমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তাদের নেত্রী দেড় বছর ধরে কারাগারে, কিন্তু দেড় মিনিটের জন্য আন্দোলন করতে পারেনি।
সর্বশেষ আমরা দেখছি রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার সরকারের যে ভূমিকা তা বিশ্বজুড়ে প্রসংশিত হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা যে রোহিঙ্গা রিফিউজি আলিঙ্গন করেছেন, তা সারাবিশ্বে প্রশংসিত। বিশ্বের কোনও দেশে যখনই কোনও রিফিউজি সমস্যা হয়েছে, এভাবে আশ্রয় চেয়েছে, কিন্তু এভাবে আশ্রয় পায়নি। সেজন্য জাতিসংঘসহ সারাবিশ্বে সমাদৃত প্রশংসিত শেখ হাসিনার রোহিঙ্গা নীতি। ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে বিএনপি জড়িত দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলে বেপরোয়া চালকের মতো রাজনীতিতে আপনারা বেপরোয়া হয়ে যান।
পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা হয়ে যান। দায় এড়ানোর বিভিন্ন বক্তব্য দেন। ইতিহাসের আদালতে জনতার আদালতে প্রমাণ হয়ে গেছে ১৫ই আগস্ট ও ২১শে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড আপনারা। এত কিছুর পরও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপির সঙ্গে কাজ করেছে দাবি করে তিনি বলেন, এরপরও শেখ হাসিনা অনেক উদার, গণতন্ত্রের জন্য আমরা কি তিন জোটের রূপরেখায় আন্দোলন করিনি? সেই জোটে বিএনপিও ছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুই খুনিকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। আমাদের পাওনা আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি, পদে-পদে আমাদের বিপদে ফেলতে চেয়েছে। আমেরিকায়-কানাডায় বঙ্গবন্ধুর যে খুনিরা লুকিয়ে রয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। পাকিস্তানে দু’জন আশ্রিত রয়েছে। আমি জানি না, কবে তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তবে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধুমাত্র মৌসুমী আয়োজন করে ডেঙ্গুর বিস্তার পুরোপুরি রোধ করা যাবে না। মঞ্চে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে সামনে রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলব, সারা বছরের প্রস্তুতি রাখতে হবে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দিনক্ষণ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আগস্টে পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, সেপ্টেম্বরে শেষ হয়ে যাবে, আবার কোথাও কোথাও দেখছি সেপ্টেম্বরে আরও ভয়াবহ হবে। কাজেই দিনক্ষণ না দিয়ে, সারা বছরটাই দিনক্ষণ। এইসব রোগের বিস্তার রোধে, এইসব ব্যধির বিরুদ্ধে আমাদের সারা বছর প্রস্তুতি রাখতে হবে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় ওষুধ হচ্ছে সচেতনতা। সেটা হচ্ছে মূল চিকিৎসা। আমি আশা করি এই লড়াইয়ে আমাদের চিকিৎসকরা সফল হবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা এম এ আজিজ বক্তব্য দেন।