মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি সহায়তার বাড়াতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অধিকারের ব্যাপারে বিশ্ব এখন অন্ধ এবং বধির। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর রাষ্ট্রবিহীন স¤প্রদায় রোহিঙ্গা মুসলিমরা বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন। মিয়ানমারের রাখাইনে রহস্যময় বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর সা¤প্রতিক সহিংসতা থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন তারা। মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, গত তিনদিনে বাংলাদেশে তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছেন। কীভাবে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছেন সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেছেন। এরদোগান বলেন, দুর্ভাগ্যজন হলেও আমি বলতে পারি, মিয়ানমারে যা ঘটছে সেই ইস্যুতে বিশ্ব এখন অন্ধ এবং বধির। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিন বছর পূর্তির দিনে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব এখন শুনে না এবং দেখে না। বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্রোতকে তিনি অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলেও মন্তব্য করেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আগামী মাসের অধিবেশনে রোহিঙ্গা নিপীড়ন নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানান তিনি। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি যে অমানবিক ও সহিংস আচরণ করা হচ্ছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে আছে তেহরান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমী জানান, মিয়ানমারের মুসলিম নাগরিকদের ওপর ক্রমাগত যে সহিংসতা চলছে ইসলামিক রিপাবলিকান অব ইরান মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে এই ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এসব সহিংসতায় বহু রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। সহিংসতায় বহু মুসলিম রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে আবার অনেকেই হয়ে পড়েছে বাস্তুহারা। গত সোমবারের ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা বিশেষ করে রোহিঙ্গা হত্যা এবং তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনায় ইরান মোটেও সন্তুষ্ট নয়। ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিচক্ষণ ও বাস্তববাদী নীতি গ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও এ ধরনের অমানবিক এবং সহিংস পরিস্থিতি থেকে বিরত থাকতে মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন কাসেমী। চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মত সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে রাখাইন রাজ্য। এসব সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৮শ রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে। সহিংসতায় বহু নারী এবং শিশুও নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার মিয়ানমার পুলিশের ৩১টি চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। তারপর থেকেই সহিংসতা বেড়ে চলেছে। কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেয় না মিয়ানমার। তারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি শরণার্থী বলে মনে করে। অপরদিকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা বার্মিজ হিসেবে পরিচিত। কোনো দেশেই নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে না রোহিঙ্গারা। তাসনিম নিউজ, পার্সটুডে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn