রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। শুক্রবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন বরিস জনসন। এ সময় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। প্রেস সচিব বলেন, বরিস জনসন দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এর সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকেই উদ্যোগী হতে হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর তাঁদের দেখভালের জন্য জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অনুমতি দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বোঝা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমারের দশ লাখের বেশি নাগরিককে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের তাঁদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। তাঁরা এখানে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ইহসানুল করিম আরও বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাকে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে ঘটে যাওয়া অনুরূপ একটি ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, তখন ছয় লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তিনি রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচাতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে নিতে শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রশংসা করেন। ইহসানুল করিম জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে একদল উচ্ছৃঙ্খল লোকের হামলার ঘটনা ব্রিটিশ মন্ত্রীর নজরে আনেন। বিষয়টি দেখা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন বরিস জনসন। বৈঠকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn