রোহিঙ্গা মুসলিম নির্যাতনে’র জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী-যুক্তরাষ্ট্র
রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নৃশংস নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকেই দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলরসন এমনটাই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য জবাবদিহিতার জন্য দায়বদ্ধ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বুধবার তিনি এমন মন্তব্য করলেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্র নেবে কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। তিনি বলেছেন, বিশ্ব ওই এলাকায় অলস হয়ে চলমান নৃশংসতার পক্ষ নিতে পারে না, তা প্রত্যক্ষ করতেও পারে না। অনলাইন আল জাজিরা এ খবর দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ৪৩ জন আইন প্রণেতা প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নতুন করে আরোপ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া এই নৃশংসতার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। যে ৪৩ জন আইন প্রণেতা এমন আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখেছেন তারা কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে লেখা ওই চিঠিতে তারা বলেছেন, যা ঘটেছে তা অস্বীকার করছে মিয়ানমার। এর প্রেক্ষিতে তারা মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছেন ওয়াশিংটনের প্রতি। গত ২৫ শে আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার পর সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা সাধারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংস নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্ষণ, গ্রামে অগ্নিসংযোগ, হত্যাযজ্ঞ সহ নানা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কমপক্ষে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা সব হারিয়ে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল। সবচেয়ে বড় শরণার্থী সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। এরই প্রেক্ষিতে রেক্স টিলারসন ওয়াশিংটনে বলেছেন, ওয়াশিংটন বুঝতে পারছে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাদেরকে শৃংখলার মধ্যে আসতে হবে এবং এ জাতীয় কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। ওই অঞ্চলে সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছে দেয়ার অনুমতি দিতে হবে। টিলারসন আরো বলেন, যেসব রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে তা যদি সত্যি হয় তাহলে এর জন্য দায়ীরা জবাবদিহিতায় আসবেন। এখন মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বতে নির্ধারণ করতে হবে তারা মিয়ানমারের ভবিষ্যতের জন্য কি ভূমিকা রাখবেন। তবে মিয়ানমারকে গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান গণতন্ত্রের একটি দেশ হিসেবে দেখে ওয়াশিংটন। কিন্তু সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সঙ্কট সরকারে ক্ষমতা ভাগাভাগিতে একটি পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।