রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কূটনীতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছেঃ কাদের
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট, রোহিঙ্গা ঢলের ৩ বছর পূর্ণ হলো মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে আসার। ইতিমধ্যে জাতিসংঘ জানিয়েছে, করোনাকালে রোহিঙ্গারা আরো সংকটাবস্থায় রয়েছে। বিশ্বের দেশগুলোকে ফের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান করা হয়েছে। এদিকে, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার কূটনীতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। সেই সঙ্গে নিজেদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্যে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার এই আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের।
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশে একটা বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গারা। যে বাংলাদেশ নির্যাতিতদের আশ্রয় দিয়েছে, সেই দেশের মানুষের উপর বর্তমান চাপাতি ঘোরাচ্ছে এঁরা। দিনে দিনে হিংস্রতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে এদের। কিন্তু এবার আর রোহিঙ্গাদের কোন খাতির/ আত্মীকরণ করা হবে না। মিয়ানমার তার দেশের রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিলে তাদের বাংলাদেশে আত্মীকরণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে সরকার। কক্সবাজারের ওপর চাপ কমানোর জন্যে সরকার চলতি বর্ষার পরই ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। এর বিকল্প হিসেবে তৃতীয় দেশে (মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের বাইরে কোনো দেশে) বৃহৎ আকারে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের চেষ্টাও বিবেচনা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গারা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছে, স্থানীয় লোকেরা তাঁদের জীবন, ভবিষ্যতের কথা ভেবে অস্থির হয়ে পড়েছেন। রোহিঙ্গাদের অত্যাচারে কীভাবে বসবাস করবেন তাঁরা? শরণার্থী রোহিঙ্গা সম্বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের স্পষ্ট অবস্থান সোমবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ এবং ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে দলে দলে রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। রোহিঙ্গা সংকটের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এবার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর বা তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের বিষয়টি উঠে এসেছে। উল্লেখযোগ্য যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চিনের অবস্থান নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। ভারতের প্রতিবেশি/বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে চিন ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। অন্যদিকে মিয়ানমারের উপরও রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোন চাপ দিচ্ছে না নিজ স্বার্থের খাতিরে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের আশ্বাস সত্ত্বেও গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাও প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ফিরে যায়নি। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয়ভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ তো করছেই, পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কাজ করছে।