লন্ডন থেকে ফাতেমা শামীম : লন্ডনে ছাতকবাসীদের সাথে মতবিনিময় সভায় সাংসদ মহিবুর রহমান মানিক বলেন, প্রবাসীদের কষ্ঠার্জিত ও প্রেরিত অর্থেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে সুনামগঞ্জ সহ সারা সিলেট বিভাগ। প্রবাসী বাঙ্গালীরা যে দল, মত বা শ্রেণিপেশার হউননা কেন তারা আমাদের গৌরব ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা। গত ৩১ শে জুলাই সুনামগঞ্জ ৫ নির্বাচনী এলাকা ছাতক দোয়ারাবাজার থেকে ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মহিবুর রহমান মানিকের যুক্তরাজ্যে আগমনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাতক দোয়ারাবাসীর ব্যানারে এক ব্যতিক্রমধর্মী মতবিনিময় সভা সম্পন্ন হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় সাবেক বৃটিশ হাইকমিশনার একমাত্র বৃটিশ বাঙালী গভর্নর আনোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ের স্মৃতিচারন করেন।
তিনি বলেন,বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরো এগুতে হবে বিশেষ করে নারীদের শিক্ষাতে জোড়ালো তাগিদ দিতে গিয়ে তিনি বললেন,পদ্মা সেতু হওয়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। মহিবুর রহমান মানিকের আমন্ত্রনে এই সভায় আসতে পেরে একজন বৃটিশ বাঙালী হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের সকল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় এমপি মানিক এগিয়ে। এমপি মানিকের জনপ্রিয়তার কথা আমি অনেক আগেই শুনেছিলাম আজ নিজ চোখে দেখে অভিভূত হয়েছি। আমি চাই জনপ্রিয়তার কথা মূল্যায়ন করে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত তাকে আরো মূল্যায়ন করা। মানিক যাতে ভবিষ্যতে তার রাজনৈতিক জীবনে আরো সফলকাম হতে পারেন এজন্য তার প্রতি আমার দোয়া ও সহযোগীতা থাকবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন ,বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাংগালী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ,বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে মহিবুর রহমান মানিকের মত গনমানুষের নেতা আওয়ামীলীগের জন্য খুবই জরুরী।
সুনামগঞ্জ-মৌলভীবাজার সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামীলগের সভাপতি এডভোকেট শামছুন নাহার বেগম শাহানা রব্বানী বলেন, এমপি মুহিবুর রহমান মানিক একজন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। জেলার সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদকে মন্ত্রীর পদ দিলে আগামী দিনে দল সবচেয়ে বেশী উপকৃত হবে।
বারকিং এবং ডেকেনহ্যামের মেয়র ফারুক চৌধুরী বলেন, মহিবুর রহমান মানিকের মত জনপ্রিয় নেতাকে আরো গূরত্বপূর্ন দায়িত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মূল্যায়ন করার জন্য সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানাই। টাওয়ার হেমলেটের সাবেক স্পীকার আহবাব হোসেন বলেন, জননেতা মুহিবুর রহমান মানিক হলেন হ্যামিলনের বাশীওয়ালা, উনি যেখানে মানুষের স্রোত সেখানে, আজকের এই সভা তার প্রমান।
কাউন্সিল লিডার আসমা বেগম বলেন, মুহিবুর রহমান মানিকের মত নেতার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখার আছে, এইরকম জনপ্রতিনিধি যদি বাংলাদেশে সব এলাকায় থাকেন তাহলে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাবে বলে কোন সন্দেহ নেই। টাওয়ার হেমলেটস এর সাবেক কাউন্সিল লিডার হেলাল আব্বাস বলেন, মুহিবুর রহমান মানিককে আমি দীর্ঘদিন যাবত চিনি, উনি একজন সাদামনের নিরংকারী মানুষ, পশ্চিমাদেশের জনপ্রতিনিধিদের যেসব গূন থাকা দরকার, উনার কাছে সেসব গূন রয়েছে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, আপনার মত জনপ্রিয় নেতা বার বার নির্যাতিত, চক্রানের শিকার হয়েও নেত্রীর কাছ থেকে আপনাকে কেউ সরাতে পারেনি, এক এগারোর সময়ও আপনি নেত্রীর ভেনগার্ড হিসাবে আপনাকে দেখেছি, সে সময়ও আপনি কারা নির্যাতন ভোগ করেছেন। এরকম নেতাকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই মূল্যায়ন করবেন। আমি আজ এ জনসভাতে ওয়াদা করতেছি আগামীতে নেত্রী লন্ডনে আসলে নেত্রী অনুরোধ করবো মানিক ভাইয়ের মত নেতাকে আপনি দয়া করে মন্ত্রী বানিয়ে দেন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হরমুজ আলী বলেন, আমি ভাগ্যবান হতাম যদি আমি ছাতক দোয়ারার বাসিন্দা হতাম। মানিক ভাইয়ের মত নেতাকে ভোট দিতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতাম। যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ সহ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মানিক ভাই সিলেট বিভাগের কিংবদন্তি নেতা । আগামীতে মানিক ভাইকে মন্ত্রীসভায় দেখার আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি। মতবিনিময় সভাটি পিন পতন নিরবতায় সম্পূর্ণ হলভর্তি মানুষের মাঝে এক অভূর্তপূর্ব শিহরন জাগিয়ে তুলে।
মত বিনিময় সভার মূখ্য আলোচক এমপি মহিবুর রহমান মানিক বলেন, আমাদের প্রবাসী ভাই ও বোনেরা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বাধীনতা স্বায়ত্বশাসন ও গণতন্ত্রের পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন সর্বাগ্রে। আবার চলমান বন্যা দুর্যোগে এই প্রবাসীরাই সুনামগঞ্জ-সিলেটের বানভাসী মানুষকে ত্রাণসহ সকল প্রকার সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছেন। তাই প্রবাসী ভাই বোনদের প্রতি আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাই। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার নাই।
তিনি তার আবেগময় বক্তৃতায় বলেন, আমি রাজনীতিতে এসে কোন অপরাধ করিনি। এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের উন্নয়ন করার জন্যই রাজনীতি করি। দীর্ঘ রাজনীতির সময়ে কখনও নিজের ব্যক্তিগত আরাম আয়েশের কথা ভাবিনি। প্রতিটি মুহুর্তে মানুষের কথা, ছাতক দোয়ারার কথা ও সুনামগঞ্জের কথা ভেবেছি এবং এখনও ভাবি। তারপরও একটি মহল আমার বিরুদ্ধে লেগেই থাকে। এরা আমার বাসায় বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়েছিলো। হত্যা করেছিল মানুষকে। আজ এরাও রাজনীতি করে। আবার এই চক্রটিই আমাকে মামলায় আসামী করে। মিথ্যে মামলায় আমাকে জেলে যেতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, কথিত ঘটনার সময় মানিক আমার সামনে সংসদে বসা ছিল। তারপরও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় চার্জসীট হয়। আমি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আশ্রয়ে ন্যায়বিচার পাই।
১/১১ এর সময় সুনামগঞ্জের এত এত নেতা থাকতে একমাত্র আমি মানিককে কারাঘারে যেতে হয় মিথ্যা মামলায়। তারপরও আমি হতাশ হইনি। রাজনীতিতে জেল জুলুম হুলিয়া অম্লান বদনে আলিঙ্গন করার কারণেই মানিককে মানুষ ভালবেসেছে। আমি আজীবন মানুষের সেই বিশ্বাস ও ভালবাসা নিয়ে বেচে থাকতে চাই। দীর্ঘ একঘন্টার বক্তব্যে তার দীর্ঘ রাজনীতি জীবনের চড়াই উৎরাইয়ের, নির্যাতনের ঘটনাবলী স্বমহীমায় উপস্থাপন করে তিনি হলভর্তি মানুষের আবেগ অনুভূতি ও ভালবাসাকে আকৃষ্ট করেন প্রবলভাবে। প্রবাসীদের একটিই দাবী উঠে শেখ হাসিনার সরকার বারবার যেমন দরকার তেমনি সিলেট বিভাগের সবচেয়ে জনপ্রিয় এমপি জননেতা মুহিবুর রহমান মানিককে অবিলম্বে মন্ত্রীসভার সদস্য করার।
দ্যা আট্রিয়াম হলে অনুষ্ঠিত এই মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন লন্ডন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব আলতাবুর রহমান মুজাহিদ। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামীলীগ নেতা বদরুজ্জামান শামীম। সভার শুরুতে পবিত্র ক্বোরআন তেলাওয়াৎ করেন মুফতি মোঃ আব্দুল অদুদ। বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর সাবিনা আক্তার, কাউন্সিলর লুৎফা রহমান, কাউন্সিলর লিলু আহমদ তাং, কাউন্সিলর বদরুল ইসলাম, কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা, কাউন্সিলর আছমা বেগম, কাউন্সিলর মাহফুজ আহমদ ফারুক, কাউন্সিলর ফয়জুর রহমান, কাউন্সিলর আবদাল উল্লাহ ও প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আয়্যুব করম আলী সহ বিভিন্ন কমিউনিটি ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
২২২ বার