লাল বেনারসির বদলে সুইটির গায়ে সাদা কাফন
সুইটি আক্তারের (১৮) বিয়ে ছিলো আজ শুক্রবার। আজ স্বামীর বাড়ি যাওয়ার কথা ছিলো তার। বিয়ে উপলক্ষ্যে বাড়িতে আলোকসজ্জ্বা করা হয়েছিলো। তোড়ন নির্মাণ করা হয়েছিলো। যে তোড়ন দিয়ে লাল বেনাসরি পড়ে সুইটি স্বামীর বাড়ি যাওয়ার কথা সেই তোড়ন দিয়ে বের হলো সাদা কাফনে মোড়ানো সুইটির মরদেহ। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) গায়ে হলুদ ছিলো সুইটির। এদিনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সুইটি উপজেলার বাড়াচান্দুরা গ্রামের মো. রশিদ মিয়ার মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মারা যান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সরাইল উপজেলার শাহাজাদপুর গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে মো. স্বপন মিয়ার সাথে বিয়ে ঠিক হয় সুইটির। আজ শুক্রবার বিয়ে। এর আগে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশি বিয়ের আয়োজন ও গায়ে হলুদের স্টেজসহ বিয়ে বাড়িতে আলোকসজ্জার কাজ করছিলেন। সুইটিও ছিল হাসি খুশি। এরমধ্যেই ঘটে যায় দুর্ঘটনাটি।
সুইটির বাবা রশিদ মিয়ার ঘনিষ্টজন মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. এরশাদ আলী। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার সুইটির জ্বর, গলা ব্যাথা শুরু হলে স্থানীয় মা-মনি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। এর পর গত বুধবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে আবারো তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উপজেলার তিতাস হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই তিতাস কর্তৃপক্ষ ব্রাহ্মণ বাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের প্রেরণ করেণ। সেখানে প্রায় ৫ ঘন্টা চিকিৎসার পর ব্রাহ্মণ বাড়িয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, সুইটিরর বুকে কফ জমাট বেঁধে গেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা নেয়ার পথে ওইদিন দুপুরের দিকে সরইল এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
এরশাদ আলী বলেন, সুইটির বিয়ে উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। গেইটসহ বিয়ে বাড়িতে করা হয়েছিল আলোকসজ্জা। কিন্তু সেই আলোকসজ্জা এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে। যে গেইট দিয়ে লাল বেনারসি শাড়ি পরে শ্বশুর বাড়ি যাওয়া কথা ছিল সুইটির সেই গেইট দিয়ে সাদা কাফনে মোড়নো তার লাশ বের হয়েছে। এরশাদ আলী জানান, রশিদ মিয়া মাধবপুরে মামুন পরিবহনের ম্যানাজার হিসেবে কাজ করতেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল তার। ছেলেও গত দুই বছর আগে একই রোগে আক্রন্ত হয়ে মারা গেছে।