শরীরের ভেতরেই হবে ডেটা সংরক্ষণ!
তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক।।
ছবি, গান, ডকুমেন্ট সহ অজস্র উপায়ে যে অসীম সংখ্যক ডেটা আমরা তৈরি করে চলেছি, কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে হচ্ছেনা তার সংকুলান। ফলে কত কম জায়গায় কত বেশি ডেটা সংরক্ষণ করা যায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানী-প্রযুক্তিবিদদের ভাবনার যেন শেষ নেই। নিত্যনতুন গবেষণা আর উদ্ভাবনের পরেও ঘাটতি যেন থেকেই যাচ্ছে। অথচ মানুষের জিনের মধ্যেই জমে আছে অসীম সংখ্যক তথ্য। যুগ যুগ ধরে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে যা বয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ। ডিএনএ-র অভ্যন্তরে থাকা সেসব তথ্যই ঠিক করে দিচ্ছে কেমন হবে কার চেহারা ও সার্বিক বৈশিষ্ট্য।
ডিএনএ-র এই অসামান্য ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই এর মধ্যে ডিজিটাল তথ্য রাখার ব্যবস্থা করে ফেলেছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিজ্ঞানী ইয়ানিভ এরলিখ ও ডিনা জিএলিস্কি এবং নিউ ইয়র্ক জিনোম সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। মাত্র এক গ্রাম ডিএনএ-র মধ্যেই তারা সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন একটি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ও একটি ভাইরাস প্রোগ্রাম, ৮ এমএম-এর একটি সম্পূর্ণ ফিল্ম, একটি সংস্থার ডিজিটাল গিফট কার্ড সহ বেশ কিছু ডেটা। অণু-পরমাণু-সৌরজগতের কাঠামো আর এক নারী ও পুরুষের ছবি ও তথ্য সমৃদ্ধ যে ‘পাওনিয়ার প্লেক’ অতীতে গভীর মহাকাশে পাঠানো হয়েছে তার ডেটাও দেয়া হয়েছে এতে। মোট হিসাব করলে যার পরিমান ২১৫ পেটাবাইট। অর্থাৎ ১ গ্রাম ডিএনএ-তে ২১.৫ কোটি জিবি ডেটা!
ডিএনএ-তে তথ্য রাখার চেষ্টা অবশ্য আগেও হয়েছে এবং এখন তা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। পার্থক্য এটাই পূর্ববর্তী প্রচেষ্টাগুলোতে ডিজিটাল ডেটা ফেরত নেওয়ার কিছু অংশ বাদ থেকে গেছে। কিন্তু ইয়ানিভরা বলছেন, তথ্য ভরা ডিএনএ তারা এনজাইমের মাধ্যমে বারবার ‘কপি’ করেছেন। নিখুঁত ডেটা ফেরত পেয়েছেন মোট নয়বার কপি করার পরেও! যা আগে কখনো ঘটেনি। ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় সোমবার ইয়ানিভদের সাফল্যের বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল। ডেটা রাখতে ৭ হাজার ডলার ও তা ফেরত পেতে আরও ২ হাজার ডলার খরচ করতে হয়েছে এই বিজ্ঞানীদের। তবে গবেষকরা বলছেন, তথ্য রাখার পক্ষে ডিএনএ হচ্ছে প্রকতির তৈরি আদর্শ পাত্র। যাতে সব চেয়ে কম জায়গায় সব চেয়ে বেশি তথ্য সংরক্ষিত থাকে এবং যা কয়েক হাজার বছর ধরে সংরক্ষণ করা যায়।